এ বছর বাটিক ও হ্যান্ড পেইন্টিংয়ের চাহিদা তুঙ্গে।
নবদ্বীপ: একটা সময় ছিল যখন পুজোর মাস খানেক আগে থেকে মহিলামহলে বোঁচকা বেঁধে হাজির হতেন তাঁতিবউ কিংবা তাঁতি নিজেই। তখনও দোকানে বসে শাড়ি কেনাকাটার চল হয়নি। এর পর একে একে দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের পর্ব পেরিয়ে এখন শপিংমলের যুগ। এরই মাঝে স্বতন্ত্র ভাবে জায়গা করে নিয়েছে বুটিক। প্রতিটি শাড়ির রয়েছে নিজস্বতা, বিশেষত্ব। এই বিশেষত্বকে হাতিয়ার করেই মফস্সলের পুজোর বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে বুটিক।
নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, কল্যাণী, রানাঘাট, চাকদহ জেলার প্রায় সব শহরেই একাধিক বুটিক চালু হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রত্যেকেই এক বাক্যে জানাচ্ছেন, অন্য বারের তুলনায় বেশ ভাল এবারের কেনাবেচা। চেনা-পরিচিতের গণ্ডিতে ব্যবসা শুরু করা ওই সব বুটিকের বেশির ভাগেরই দায়িত্বে রয়েছেন মহিলারা। অবশ্য পুরুষেরাও বুটিক চালাচ্ছেন।
যেমন, কৃষ্ণনগরের সুপার্থ সাহা এবং দ্বীপান্বিতা সাহা দাসের বুটিকে পুজোর কেনাবেচার বেশ ভিড়। সুপার্থ বাবু বলেন, “কয়েক বছর হয়ে গেল বুটিক চালাচ্ছি। কিন্তু এ বছর যেন মানুষের চাপটা বেশি। বড় দোকানের কেনাকাটার পাশাপাশি অনেকেই আসছেন বুটিকে। সেই ক্রেতাদের ধরে রাখতে গেলে এমন কিছু বিশেষ দিতে হবে যা, শুধুমাত্র সেই ক্রেতার কাছেই থাকবে। আমরা সে দিকেই নজর বেশি দিচ্ছি।” একধারে বেড়ে চলা শপিংমলের যুগে ছোট-ছোট বুটিক কেন টানছে ক্রেতাদের? জবাবে সরকারি চাকুরে নবদ্বীপের সৌমালি চট্টোপাধ্যায় বলেন,“বুটিক থেকে নাগালের মধ্যে দামে এমন কিছু কিনতে পারছি, যা অন্য কারও সংগ্রহে নেই। এটাই সব চেয়ে বড় আকর্ষণ বুটিকের।”
আরও পড়ুন: পুজোয় কলকাতা ছাড়বেন সোহিনী, কেন জানেন?
আরও পড়ুন: স্ট্রিট ফ্যাশনের চেনা ছবিতে পুজোর আগে কলকাতা
এবারের পুজোয় বুটিক ফের দেখা মিলছে বাটিক এবং হ্যান্ড পেইন্টিংয়ের। বিভিন্ন কটন, হ্যান্ডলুম বা লিনেনের উপর ওই কাজের চাহিদা খুব বেশি। হ্যান্ডলুমের উপর মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচ, পেইন্টিং, নতুন ধরনের কাজের চাহিদা খুব বেশি। নবদ্বীপের এক বুটিক-মালিক টুম্পা সরকার বলেন, “লোকে সাধারণত আটশো থেকে বারোশো টাকার রেঞ্জেই বেশি কেনাকাটা করেন।
কৃষ্ণনগরের তপোলব্ধা ভট্টাচার্যের বুটিকের পোশাক কলকাতা ছাড়াও রানাঘাট, কল্যাণী, নৈহাটির মতো শহরে বিক্রি হয়। তিনি বলেন, “এই বছর মানুষ অনেক বেশি বুটিকে আসছেন।’’ তাঁর মতে, উৎসবের ভিড়ে অন্যদের চেয়ে নিজেকে আলাদা করায় বুটিক ছাড়া আর উপায় কী?