কিংবদন্তী কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর 'বঙ্গভাষা' কবিতায় লিখেছিলেন, 'হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন...'! এ ভাবেই রত্নগর্ভা বঙ্গজননী তথা এই বঙ্গভূমির প্রাচুর্য ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলার এই মাটি কী বিপুল সম্পদশালী!
এই সম্পদ কেবলমাত্র প্রাকৃতিক নয়, সাংস্কৃতিকও বটে। যুগে যুগে এই মাটিতে আবির্ভাব ঘটেছে মহান মনীষীদের। আজ যখন বাংলা ভাষা নিয়ে সারা দেশে এক প্রতিকূল ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক সেই সময় রত্নগর্ভা বাংলার সোনার সন্তানদের স্মরণ করছে যোধপুর পার্কের ৯৫ পল্লী অ্যাসোসিয়েশন দুর্গোৎসব কমিটি কর্তৃপক্ষ।
এ বারের আয়োজনের থিম সম্পর্কে কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি বিজয় দত্ত। তিনি জানান, মাইকেলের কবিতার লাইন আশ্রয় করেই তাঁদের এ বারের পুজোর থিম 'হে বঙ্গ ভাণ্ডারে...'!
বিজয় আরও জানান, তাঁদের পুজোর বয়স ৭৬ বছর। এ বার শিল্পী শক্তি শর্মার তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে মায়ের মূর্তি তথা সমগ্র মণ্ডপ।
বাংলার মনীষীরা যুগে যুগে সারা ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়েছেন, বিশ্ব দরবারের দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। এ বারের শারদোৎসবে তাঁদের সেই সমস্ত অবদান তথ্য-সহ তুলে ধরা হচ্ছে।
সেই তালিকায় রয়েছেন - ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস থেকে শুরু করে অস্কারজয়ী, নোবেলজয়ী কিংবদন্তী বাঙালিরা।
মণ্ডপ সাজিয়ে তুলতে বাঙালি মনীষীদের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
মণ্ডপ নির্মাণ করতে সব থেকে বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে রট আয়রন। সঙ্গে রয়েছে প্লাস্টার অফ প্যারিস, কাঠ ও কাগজের মনোগ্রাহী কারুকাজ।
এ ছাড়াও, মণ্ডপসজ্জায় শঙ্খের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তার জন্য দিঘা থেকে প্রায় হাজার খানেক শঙ্খ আনা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে সিন্দুক ব্যবহার করা হয়েছে।
পাশাপাশি, আলোকসজ্জাতেও বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। আলো দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী দীনেশ পোদ্দার। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।