কলকাতায় থেকেই পেতে চান আদিবাসী সংস্কৃতির স্বাদ? তাহলে, এবার পুজোয় আপানকে আসতেই হবে হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির দুর্গামণ্ডপে।
শহরের অন্যতম প্রাচীন এই বারোয়ারি পুজোর বয়স ৯৫ বছর।
এ বছরের এই আয়োজন সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার দায়িত্বে যে মানুষটি রয়েছেন, তাঁর নাম মলয় রায়। মলয় জানালেন, এ বছর তাঁদের পুজোর থিম 'লোকজ'।
নামকরণ থেকেই স্পষ্ট, এই থিমে লোকসংস্কৃতির কোনও এক বা একাধিক দিক তুলে ধরা হচ্ছে।
বাংলার আদিবাসীদের একটি প্রাচীন প্রথা হল চদরবদর। হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীনের পুজোমণ্ডপে এ বার মূলত সেই প্রথারই নানা দিক প্রদর্শিত হবে।
আদিবাসী শিল্পীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে পুতুলনাচ দেখান। বদলে তাঁদের প্রাপ্তির ঝুলি ভর্তি হয় চাল, ডাল-সহ নানা প্রকার সামগ্রীতে। দিন শেষে সে সব নিয়ে ঘরে ফেরেন শিল্পীরা। গোটা গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে সেই সমস্ত সামগ্রী রান্না করেন এবং খাওয়াদাওয়া সারেন।
এই প্রথাকেই বলা হয় চদরবদর। যা সময়ের গ্রাসে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। নবীন প্রজন্ম আর এই পুতুলনাচ শিখতে বা দেখাতে আগ্রহী নয়।
এমনকী, চদরবদরে ব্যবহৃত - আদিবাসী শিল্পীদের নিজেদের হাতে তৈরি বাদ্যযন্ত্রগুলিও আজকালকার আদিবাসী ছেলেমেয়েরা আর বানায় না বা সেই কাজ তারা শিখতেও চায় না।
হারিয়ে যাওয়া এই লোক সংস্কৃতিই এ বছর হিন্দুস্থান পার্কের পুজোমণ্ডপের থিমে দেখা যাবে। এমনকী, সেখানে আদিবাসী শিল্পীরা এসে নাচ, গানও করবেন।
মণ্ডপ তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে - বাঁশ, কাঠ, মাটি, টিন, লোহা প্রভৃতি প্রাকৃতিক সামগ্রী। প্রকৃতির সঙ্গে আদিবাসী সমাজের আত্মিক সম্পর্ক বোঝাতে মণ্ডপের অধিকাংশ স্থানেই কোনও পুরু ছাদ বা চালা নির্মাণ করা হচ্ছে না। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।