kali Puja 2022

দেবীর ঠোঁটের কোণে রক্ত, কোমরে শিকল বাঁধা! রামকৃষ্ণদেবের ডাক্তারের বাড়ির পুজোয় আছে আর কত গল্প?

এই বাড়ির পুজোয় দেবীর রূপ চামুণ্ডার, তাঁর পা ও কোমর থাকে শিকলে বাঁধা।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৫৫
Share:

নানা রূপে দেবী কালীর কত রকমেরই না আরাধনা হয়ে থাকে! আর সেই সঙ্গে জড়িয়ে থাকে কত অবাক করা গল্পকথা, কত বিশেষ নিয়মরীতি!

Advertisement

রামতারক গুপ্ত ছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের চিকিৎসক। তাঁর পরিবারের প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন কালীপুজো ঘিরে রয়েছে এমনই নানা কাহিনি ও গল্প।শ্রীপুরের বৈদ্যবাড়ির এই কালীপুজো কামারপুকুর অঞ্চলের অন্যতম বিখ্যাত ও অত্যন্ত জাগ্রত বলেই পরিচিত। এই বাড়ির পুজোয় দেবীর রূপ চামুণ্ডার, তাঁর পা ও কোমর থাকে শিকলে বাঁধা। এই পুজোর আশ্চর্য নিয়ম হিসেবে পুজোর দিনে কোনও মহিলা লালপাড়ের শাড়ি বা পায়ে আলতা, নূপুর ইত্যাদি পরে পুজো দেওয়া নিষিদ্ধ। দেবী এতে রুষ্ট হন বলে পরিবারের বিশ্বাস। মা রুষ্ট হতে পারেন, এমন কোনও নিয়মের তাই অন্যথা করা হয় না এই পুজোয়। কালীপুজো হয় সাড়ম্বরে ও নিষ্ঠা সহকারে।

কথিত যে, রামতারক গুপ্ত নিজেই শুরু করেছিলেন এই পুজো। আর এই বিশেষ রূপের দেবী প্রতিমার পিছনেও রয়েছে বহু কাহিনি। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়ির কোনও এক মহিলা বহু বছর আগে লালপাড় শাড়ি ও পায়ে আলতা-নূপুর পরে মন্দিরে দেবীর আরতি করতে যেতেন নিয়মিত। হঠাৎ এক দিন তিনি মন্দিরে গিয়ে আর ঘরে ফেরেননি! তাঁর শ্বশুরমশাই পুত্রবধূকে খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান দেবীর বিগ্রহের মুখে রক্তমাখা সেই কাপড়ের লাল পাড়! তাঁর পুত্রবধূও চিরতরে হারিয়ে যান। এই ঘটনার পরেই মন্দিরের অন্দরে মহিলাদের এমন সাজ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এমনকি সন্ধ্যারতি করাও বারণ পরিবারের মেয়েদের।

Advertisement

শুধু তাই নয়, এই পুজোর চমক আছে আরও নানা স্তরে। বিগ্রহের ঠোঁটের এক কোণে আঁকা থাকে রক্ত ও লাল পাড়। দেবী নির্জনতাই পছন্দ করেন, তাঁর জমায়েত পছন্দ নয়। তাই মন্দির প্রাঙ্গণে শুধু একটা ল্যাম্প ও মোমবাতি জ্বালানো থাকে। কোনও ভাবেই লাউডস্পিকার বা জোরে গান বাজানো হয় না। কেবল পুজোর সময়ে ঢাকের বাদ্যি থাকে।

বিগ্রহকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখাই এখানে রীতি। সঙ্গে মেনে চলা হয় একাসনে পুজো। রাতে পুজো শুরু হলে ভোরের আলো ফোটার পরে তা শেষ করে সুতো কেটে তবেই পুরোহিত আসন ছেড়ে উঠতে পারেন। এখানে বলি দেওয়ার নানা রকম রীতি আছে। পাঁঠা, আখ বা ছাঁচি কুমড়ো সবই বলি দেওয়া যায়। অনেকেরই মানত থাকে একে ঘিরে।

স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী, এলাকার একটি নির্দিষ্ট পুকুরেই কেবল বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। আবার কাঠামো ফিরিয়ে আনা হয় তার পরেই। প্রতিমার কোনও ছাঁচ থাকে না। বংশপরম্পরায় এই মূর্তি বানানো হয়। পুজোও করেন বংশ পরম্পরায় এক চট্টোপাধ্যায় পরিবার!

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন