সংগৃহীত চিত্র।
এই বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য যে কতটা মজবুত, তার অনন্য উদাহরণ হল - হুগলির চন্দননগরের কাঁটাপুকুর সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো সমিতির প্রতিষ্ঠা ও তাদের প্রায় ৬০ ছুঁই ছুঁই বারোয়ারি পুজোর পরম্পরা! একাত্ম হয়ে যার সূচনা করেছিলেন - দু'টি ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের এক জন হিন্দু এবং অন্য জন মুসলমান!
পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, আজ যে ভাবে চারিদিকে ধর্ম ও সম্প্রদায় নিয়ে এত ভেদাভেদ দেখা যাচ্ছে, তা অতীতে সেই সময়ে ছিল না, যখন কাঁটাপুকুরে মায়ের পুজো শুরু করেছিলেন শেখ রহমান ও সুজিত দেবশর্মা।
সৌম্যজিৎ আরও জানিয়েছেন, সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন আজও এই পুজোয় অটুট। তাই জগদ্ধাত্রী পুজোয় যতটা এখানকার হিন্দু সম্প্রদায় মেতে ওঠে, ঠিক ততটাই উৎসবে সামিল হয় স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়। এমনকী, মায়ের অঙ্গসজ্জা থেকে তাঁর নিরঞ্জন - সবেতেই অহিন্দুদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এই পুজো কমিটির সম্পাদকও ভিন ধর্মী। কিন্তু, তা নিয়ে কখনও কোনও দ্বন্দ্ব বা বিবাদ হয় না। সকলে মিলেই মায়ের আরাধনার সমস্ত বন্দোবস্ত সারা হয়। এ বারও যার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি।
প্রতি বছর কাঁটাপুকুরের এই জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। সেই ভিড়ের কোনও জাত নেই। সেই ভিড় শ্রদ্ধায়, ভক্তিতে, আনন্দে, খুশিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর সামনে মাথানত করে! জগতের যিনি মা, তাঁর কাছে তো এ ভাবেই সকলে আশীর্বাদ নেবে। সেখানে তো সত্যিই কোনও বিভেদ-বেড়া থাকতে পারে না।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।