কলকাতার বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল - জোড়াসাঁকোর দাঁ বাড়ির দুর্গাপুজো।
এখানে বলে রাখা দরকার, জোড়াসাঁকো এলাকায় দাঁ বাড়ি বলতে দু'টি ভিন্ন বাড়ি বোঝায়। একটি হল - শিবকৃষ্ণ দাঁ-এর বাড়ি, অন্যটি নরসিংহ চন্দ্র দাঁ-এর বাড়ি। এই প্রতিবেদনে দ্বিতীয় বাড়িটির কথা বলা হচ্ছে।
নরসিংহ চন্দ্র দাঁ-এর বাড়ির পুজো 'বন্দুকবাড়ির পুজো' নামেও সমান জনপ্রিয়। কারণ, প্রাচীন প্রথা মেনে আজও এই বাড়িতে প্রতি বছর দুর্গাপুজোর শুভ সূচনা ও সমাপ্তি ঘটে বন্দুকের গুলি ছুড়ে!
শোনা যায়, নরসিংহ চন্দ্র দাঁ ছিলেন প্রসিদ্ধ বন্দুক ব্যবসায়ী। এই পরিবারের সদস্যরা আজও আগ্নেয়াস্ত্র ও বারুদের ব্যবসা করেন। কলকাতা শহরের একাধিক জায়গায় এঁদের দোকানও রয়েছে।
তথ্য বলছে, নরসিংহ চন্দ্র দাঁ-এর বাড়িতে দশভুজার আরাধনা শুরু হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। অর্থাৎ - শিবকৃষ্ণ দাঁ-এর বাড়ির পুজো শুরু হওয়ার প্রায় ১৯-২০ বছর পর এই পুজোর সূত্রপাত।
দাঁ পরিবারের পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, মাতৃমূর্তিকে স্বর্ণালঙ্কারে সাজিয়ে তোলা। সেই প্রথা আজও এই বাড়ির পুজোয় পালন করা হয়।
কথিত আছে, প্রতি বছর মর্ত্যে আসার পর কলকাতার দাঁ বাড়িতেই নাকি উমা গয়না পরেন! এই কিংবদন্তী আজও দাঁ পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।
নরসিংহ চন্দ্র দাঁ-এর পরিবারের জোড়াসাঁকোর বাড়িটি এখনও শহরের বুকে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই বাড়ির নকশা যে কাউকে মুগ্ধ করবে!
বাড়ির অন্দরমহলে ঢুকলে দেখা যায় সাবেক খিলান ও দেওয়ালে-স্তম্ভে নানা ধরনের কারুকাজ সযত্নে রক্ষিত হয়ে রয়েছে!
তাই, এ বারের শারদোৎসবে বনেদি বাড়ির পুজো দেখতে হলে নানা ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়ির পুজোও 'মাস্ট ওয়াচ' তালিকায় রাখতেই হবে। বাড়ির ঠিকানা - ২২এ বিবেকানন্দ রোড, রাজা কাটরা সিংহি বাগান, জোড়াসাঁকো, কলকাতা। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।