কালীপুজোর মুখে নবদ্বীপের পোড়ামাতলা মন্দিরে ভিড় বাড়ছে দিন দিন।
নবদ্বীপ। নাম শুনলেই মনে আসে শ্রীচৈতন্যর কথা, কীর্তন আর সেই প্রেমের বন্যা। কিন্তু এই নবদ্বীপে আছে এক অন্য গল্প। যার কেন্দ্রবিন্দু পোড়ামাতলার মন্দির।
এখানকার পরিবেশ দিনের বেলাতেও যেন অন্য রকম। বিরাট এক বটগাছের তলায় এই মন্দির, যেখানে সূর্যের আলো যেন সহজে পৌঁছতে চায় না।
চার পাশের সেই গা ছমছমে অন্ধকার যেন মন্দিরটিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে।
কথিত, এই বটগাছ এক সময়ে নাকি বজ্রপাতের কারণে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সেই থেকেই নাকি এখানকার দেবী 'পোড়া মা' নামে পরিচিত।
এর চেয়েও অবাক করা বিষয় হল, এখানে দেবীর কোনও মূর্তি নেই, নেই কোনও আকার।
কেবল একটি ঘটে কালীর রূপ কল্পনা করে যুগ যুগ ধরে পুজো করে আসছেন ভক্তরা। বিশ্বাস আর ভক্তিই এখানে দেবীর আসল রূপ।
মন্দিরের এই প্রাচীন বটগাছ আর তাতে বাঁধা অজস্র মানতের সুতো দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। প্রতিটি সুতোয় যেন হাজারো মানুষের আশা আর প্রার্থনা জড়িয়ে আছে।
ভক্তদের বিশ্বাস, চৈতন্যদেবের অন্নপ্রাশন নাকি হয়েছিল এই মন্দিরেই।
মন্দির চত্বরে ঢুকতেই চোখে পড়ে ছোট-বড় অনেক দোকান। সেখানে পাওয়া যায় দেবীর জন্য গয়না, পুজোর ফুল, নৈবেদ্য আর প্রসাদ।
এক দিকে পোড়ামাতলা, আর তার গা ঘেঁষেই রয়েছে দেবী ভবতারিণীর মন্দির।
এই দুই মন্দির ঘিরে থাকা মানুষের আবেগই বলে দেয়, নবদ্বীপ শুধু কৃষ্ণনামে নয়, এই পোড়া মায়ের টানেও অনেকে ছুটে আসেন। ( এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।