পুকুরঘাটে ভোরের কুয়াশা। মহাসপ্তমীর সকালে সেই ঘাটেই নবপত্রিকা স্নান দিয়ে শুরু হয় জঙ্গিপাড়া মথুরাবাটীর দুর্গাপুজো।
সঙ্গে কালী কীর্তনের সুর, মৃদঙ্গ আর করতালের টানে গ্রাম যেন এক অন্য আবহে ডুবে যায়।
বাড়ির আঙিনায় তৈরি হয় দেবীর প্রতিমা।
ডাকের সাজে সাজানো হয় দেবীকে, চালচিত্রে তুলির আঁচড়ে ধরা পড়ে শিব, রাধা-কৃষ্ণের কাহিনি।
রথযাত্রার দিন মূর্তির মাটির আনা হয়, চলে কাঠামো পুজো।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই নিয়ম মেনে চলা হয়েছে। এ বারও তার ব্যতিক্রম নেই।
মহানবমীর সন্ধ্যায় যখন শালপাতার বাতাস করা হয় দেবীকে, সেই আরতির সময় মথুরাবাটী গ্রাম যেন আলো-আঁধারির খেলায় নতুন রূপ নেয়।
পুজোর আবেগে আরও এক বিশেষ অধ্যায়—কুমারী পুজো। গ্রাম্য পরিবেশে সেই রীতি পালনের মধ্যেই ধরা পড়ে ভক্তির অন্য রূপ।
ইতিহাস বলছে, জঙ্গিপাড়া–মথুরাবাটীর পুজো সম্ভবত উনিশ থেকে বিশ শতকের গোড়ায় গুপ্তিপাড়ার বারোয়ারি ধারা থেকে প্রসারিত হয়।
চাঁদাভিত্তিক সেই পরম্পরাই এক সময় গ্রামীণ সমাজকে এক সূত্রে বেঁধেছিল। এখনও সেই আবেগেই ভাসে মথুরাবাটী।
গ্রামের দুর্গাপুজো মানেই কেবল দেবী দর্শন নয়, এক সঙ্গে থাকার আনন্দ। জঙ্গিপাড়ার এই পুজো তারই প্রমাণ। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)