Indian Moblie phone company

পুজোর আগেই কি ভারতে তৈরি হবে দেশীয় মোবাইল কোম্পানি?

উত্তর হল, না। কিন্তু কেন? তারই ব্যাখ্যা এই লেখায়।

Advertisement

অভ্র রায়

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারতের স্মার্ট ফোন মার্কেটে ভারতীয় কোনও ম্যানুফাকচারিং কোম্পানিকে খুঁজে পাওয়া যায় না কেন? ভারতে এত স্টার্ট-আপ তৈরি হচ্ছে, কিন্তু স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ নয়।

Advertisement

প্রথমতঃ, স্মার্টফোনের বাজার কিন্তু বিশ্ব জুড়েই নিম্নমুখী। হ্যাঁ, আপনার চট করে বিশ্বাস হবে না, কিন্তু এটাই সত্যি। বছর দশেক আগে যে দামে যে রকম স্মার্টফোন আমরা পেতাম, এখন সেরকমই পাচ্ছি। অথচ টেকনোলজির যে ভাবে উন্নতি হয়েছে, হিসাব মতো আমাদের আরও বিভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য, অনেক বেশি ধরনের ফোন এক রকমের বাজেটে পাওয়ার কথা। দ্বিতীয়তঃ, এই প্রযুক্তির উন্নতি যতটা হয়েছে, তাতে স্মার্টফোন আমাদের নিত্য নতুন কিছু ফিচার আর দিতে পারছে না। মানুষের হাতে এত ভাল ভাল বৈশিষ্ট্যের স্মার্টফোন রয়েছে যে সেগু লো ঘন ঘন বদলানোর কথা মানুষ ভাবছে না। এই সব কিছুর প্রভাব পড়ছে বিক্রির বাজারে, যা নিম্নমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে। ভারতের মতো জনবহুল দেশে এটা কিন্তু লগ্নীকারীদের যথেষ্ট চিন্তায় রাখবে। এবার ভেবে দেখুন, একটা নিম্ন-সম্ভবনাময় ক্ষেত্রে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইবে কি? স্বভাবতঃই লগ্নকারীর সেই সব স্টার্ট-আপেই লগ্নী করছেন যে গুলির ভাল বাজার আছে।

কিন্তু এ সব তো গেল প্রাথমিক কথা। দু-একটা ভারতীয় কোম্পানি তবুও চেষ্টা করতে চেয়েছে। যেমন, মাইক্রোম্যাক্স বাজারে ফেরার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদেশি কোম্পানি গুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গিয়ে আপাততঃ তারা টা-টা-বাই-বাই করে ইলেকট্রিক স্কুটারে মনোনিবেশ করেছে।

Advertisement

এখনও অবধি লাভা কোম্পানিকে ধরা যায় যে, ভাল ফোন বানাচ্ছে এবং নিয়মিত বানাচ্ছে। এই ‘নিয়মিত’ কথাটিতে অবশ্য একটা সমস্যা আছে। লাভা নিয়মিত ফোন বানায়, কিন্তু সেটা বহুদিন বাদে বাদে। ন’মাসে-ছ’মাসে একটা করে ফোন বানিয়ে স্যামসাং-অ্যাপেল কিংবা অন্যান্য চাইনিজ কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধ করা যায় না। তা হলে লাভা কি কুঁড়েমি করছে, নাকি তারা ব্যবসাটা বোঝে না?

আসলে ফোন তৈরির জন্য ছোট ছোট অসংখ্য পার্টস লাগে, যার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা ও উন্নয়নের প্রয়োজন। বিদেশি কোম্পানি গুলি বহুদিন ধরেই এই ব্যাপারে লগ্নী করে এসেছে। প্রচুর পেটেন্টের স্বত্তাধিকারী এরা। এই ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বলে রিসার্চ করে নতুন টেকনোলজি আনার ক্ষমতা রাখে।

প্রতীকী ছবি।

ভারতীয় কোনও স্টার্ট-আপ এর পক্ষে এত সময়, টাকা ও শ্রম ব্যয় করা প্রায় অসম্ভব। যে সব ছোট পার্টস-এর কথা আগে বলা হল, কিছু কোম্পানি সে গুলি অন্যান্য কোম্পানি থেকে কিনে ‘অ্যাসেম্বল’ করে ফোন তৈরি করে। কোনও ভারতীয় কোম্পানি যদি তা করে এবং নিজস্ব কিছু ভাবনা তার সাথে মিশিয়ে নিত্য নতুন ফোন এনেও ফেলে, চিনা কোম্পানিগুলি খুব সহজেই তা নকল করে ফেলে এবং তুলনায় সস্তা দামে তা বাজারে ছেড়ে দিতে পারে। কারণ চিনে উৎপাদনের খরচ আরও কম। তা হলে কোনও ভারতীয় কোম্পানি কি কখনও স্মার্টফোন বাজার ধরতে পারবে না?

ভারতীয় অর্থনীতির জন্য, চাকরির সুযোগের জন্য, এবং আরেকটু কম দামে স্মার্টফোন পাবার জন্য ভারতীয় কোম্পানির স্মার্টফোনের বাজার ধরা খুবই দরকার। আপাততঃ সে সম্ভবনা ক্ষীণ হলেও কোনও বড় শিল্পোদ্যোগী কখনও এগিয়ে এসে বড় মাপে কিছু শুরু করতেই পারেন, কারণ বিজ্ঞানে মেধার কমতি ভারতের কোনও দিনই ছিল না, ইসরো তা বারবার প্রমাণ করেছে।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement