বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের জেলা কমিটির নাম ঘোষণা হতেই গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল আউশগ্রাম। হামলার পাশাপাশি অভিযোগ বোমাবাজিরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলছে পুলিশি টহলদারি।
উক্তা গ্রামে একাধিক ব্যক্তির উপর হামলা, গাড়ি ও বাইক ভাঙচুর এবং বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার জেলা কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় আউশগ্রামের বেরেণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা সফিকুল আলম মণ্ডলকে জেলা কমিটির সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। এর পরে স্থানীয় উক্তা ও পিচকুড়ি গ্রামের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের একাংশ সফিকুলকে সম্বর্ধনা দেন। কালীদহ বাজার এলাকায় একটি মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগ, সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান ও মিছিল শেষ করে বাড়ি ফেরার পরে সফিকুলের অনুগামীদের উপরে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়ি ও বাড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বোমাবাজির ঘটনাও ঘটেছে।
হামলার অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা শেখ আজিফুন্নেসার বাড়িতেও। তিনি ও তাঁর স্বামী সাজিদুর রহমান শেখের দাবি, পঞ্চায়েত সদস্য ও কৃষি বিভাগের দায়িত্ব নিয়ম মেনেই পালন করেন আজিফুন্নেসা। অঞ্চল সভাপতি আমদুল হক মল্লিক ওরফে চঞ্চলের গোষ্ঠী তোলাবাজির চেষ্টা করে থাকে। তাদের মতে রাজি না হওয়াতেই বেশ কয়েক জন মিলে বাড়িতে হামলা চালান। হুমকি ও ভয় দেখানোর পাশাপাশি আজিফুন্নেসাদের বাড়ি ও গ্রামে বোমা ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ।
এই প্রসঙ্গে আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, গতকাল দল এবং শাখা সংগঠনের পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারপর কী হয়েছে আমার জানা নেই। যদি কেউ অশান্তি সৃষ্টি করে, দলের সিদ্ধান্ত না মানে তবে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলে শৃঙ্খলাই বড় কথা।
বিজেপি মুখপাত্র শান্তরূপ দে বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতি।’’ তাঁর অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমান জেলায় সম্প্রতি যে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দলের উচ্চ নেতৃত্বকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়। তবে তা দিলেও যে সকলের নাম কমিটিতে থাকে, এমন হয় না বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, যাঁরা অর্থ দেওয়ার পরেও কমিটিতে জায়গা পাননি, তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। আউশগ্রামের পিচকুরি গ্রামের ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে সেই ক্ষোভই প্রকাশ্যে এসেছে।