East Bardhaman Theft

চুরির নেশায় খেয়াল নেই কখন ভোর! পড়িমরি করে পালাতে গিয়ে পা ভাঙল এক চোরের, বাকিরা পালাল ১৩ লক্ষ নিয়ে

একটি দোতলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে রাস্তায় পড়ে একজন। শব্দ শুনে লোকজন বেরিয়ে পড়েন। ধরা হয় ওই ব্যক্তিকে। ভয়ের চোটে গড়গড়িয়ে চুরির কথা বলে দেয় সে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৪৩
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

একের পর এক বাড়িতে লুটপাট চালাচ্ছিল চোরের দল। পর পর চারটি বাড়ির দরজার তালা ভেঙেছিল তারা। ‘অপারেশন’ শুরু হয়েছিল মাঝরাতে। চুরির নেশায় এমন বুঁদ যে ভোরের আলো ফুটেছে খেয়াল করেনি কেউ। তড়িঘড়ি পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল এক চোর। ছাদ থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে পা ভেঙে যায়। তাকে ধরতেই পুরো দলের হদিস পেল পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপের কালিকাপুর গ্রামে ঘটনা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ একটি দোতলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে রাস্তায় পড়ে একজন। শব্দ শুনে লোকজন বেরিয়ে পড়েন। ধরা হয় ওই ব্যক্তিকে। ভয়ের চোটে গড়গড়িয়ে চুরির কথা বলে দেয় সে। বলে, পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড লেগেছে। খবর যায় থানায়। গ্রেফতার করা হয় ওই চোরকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম সামারুল শেখ। বাড়ি নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার কামারি গ্রামে। বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। সামারুল জানায়, তারা দু’জন ছিল। কিন্তু স্থানীয় লোকজন তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, অন্তত ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল গ্রামে হানা দিয়েছিল। চারটি বাড়ির তালা ভেঙে ঢুকলেও দুটি বাড়ি থেকে তেমন কিছু নিতে পারেনি তারা। বাকি দুই বাড়ির প্রায় সমস্ত দামি জিনিস লুট করেছে তারা। পাঁচ ভরি সোনার গয়না-সহ আনুমানিক ১৩ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

পুলিশও জানাচ্ছে, পরিকল্পিত ভাবেই কালিকাপুরে হানা দিয়েছিল দলটি। চারটি বাড়ির মধ্যে তিনটি বাড়ির গৃহকর্তা কর্মসূত্রে রাজস্থানের জয়পুরে থাকেন। অলঙ্কার ব্যাবসায় যুক্ত তাঁরা। তাই বেছে বেছে ওই বাড়িগুলিকে টার্গেট করা হয়। সবচেয়ে বেশি লুটপাট হয়েছে সনাতন হালদার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে। সনাতন সস্ত্রীক জয়পুরে থাকেন। সনাতনের শ্বশুরবাড়ি পাশেই। শ্বশুর শ্যামল হালদার নিয়মিত মেয়ে-জামাইয়ের বাড়ি দেখাশোনা করেন। শ্যামলের শ্যালক বোধন জানান, ভোরে ভাগীরথীতে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। হঠাৎ সময় ভাঙচুরের শব্দ শুনে সন্দেহ হয় তাঁর। তিনি প্রতিবেশীদের জানান। গ্রামবাসীরা ছুটে আসতেই কয়েকজন চোর তড়িঘড়ি পালায়। সামারুল পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছে।

সনাতনের বাড়ির একাধিক আলমারি ভেঙে সোনার ও রুপোর গয়না, পিতলের সামগ্রী, দামি শাড়ি ইত্যাদি চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। সুকান্ত সেন নামে এক প্রাথমিক শিক্ষকের বাড়িতেও তালা ভেঙে লুটপাট চালায় চোরের দল। সুকান্তরা কাটোয়া শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় থাকেন। গ্রামের বাড়িটি তাঁর মামা জহর বিশ্বাস দেখাশোনা করেন। তিনি জানান, সুকান্তনজরুরি কাজে আসানসোলে ছিলেন। তাঁকে ফোনে চুরির বিষয়টি জানান। পিন্টু হালদার ও অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় নামে আরও দু’জনের বাড়িতেও দরজার তালা ও গেট ভেঙে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। তদন্ত শুরু করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ। পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement