বয়লার ফেটে মৃত ২৬ বাংলাদেশ

সামনেই বকরিদ। সেই উপলক্ষে আজ থেকেই শ্রমিকদের ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। কারখানা ক’দিন বন্ধ থাকবে। তাই রাতের শিফ্‌টে চলছিল জোরকদমে কাজ। আচমকা এক বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে গেল সব কিছু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৯
Share:

ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ। চলছে আগুন নেভানোর কাজ। শনিবার বাংলাদেশের টঙ্গিতে। ছবি: এএফপি।

সামনেই বকরিদ। সেই উপলক্ষে আজ থেকেই শ্রমিকদের ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। কারখানা ক’দিন বন্ধ থাকবে। তাই রাতের শিফ্‌টে চলছিল জোরকদমে কাজ। আচমকা এক বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে গেল সব কিছু।

Advertisement

বাংলাদেশের গাজিপুরের টঙ্গির রেলগেট এলাকায় একটি প্যাকেজিং কারখানায় আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। আহত পঞ্চাশেরও বেশি। কারখানায় একটি বয়লার ফেটে গিয়েই এই বিপত্তি বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিস্ফোরণের জেরে কারখানা ভবনটি পুরো ধসে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকে আটকে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আজ ভোর ছ’টা নাগাদ পাঁচ তলা ওই বাড়িটি থেকে প্রথমে ভয়াবহ শব্দ হয়। মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িটির উপরের দু’টি তলা। তার পরই গল গল করে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে কারখানা ভবনটি থেকে। আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারাই ছুটে যান উদ্ধার কাজে। কিন্তু ধোঁয়ার তীব্রতা এতটাই ছিল যে ওই কারখানার আশপাশে ঘেঁষাই দায় ছিল। তার পরই খবর যায় দমকলে। ২৫টি ইউনিট প্রায় ন’ঘণ্টার চেষ্টার পরে ওই কারখানার আগুন আয়ত্তে আনে।

Advertisement

গাজিপুরের দমকলের শীর্ষ কর্তা মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, কারখানাটি মূলত ফয়েল পেপার ও রাসায়নিক দ্রব্যে ঠাসা ছিল। তাই আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের জেরে গোটা বাড়িটাই ধসে পড়েছে। আশপাশের আরও বেশ কয়েকটা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত।

আজকের অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। গাজিপুরের স্থানীয় প্রশাসনও আলাদা করে ২৫ হাজার টাকা দেবে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কারখানার মালিকও। ওই কারখানাটির মালিক বিএনপির প্রাক্তন সাংসদ সৈয়দ মকবুল হোসেন। তাঁর বক্তব্য, বয়লারে কোনও ত্রুটি ছিল বলে তিনি জানতেন না। তবে শেষ কবে বয়লার পরীক্ষা করা হয়েছিল, তা-ও জানাতে পারেননি তিনি। টঙ্গি থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, কাল রাতে প্রায় ৭৫ জন শ্রমিক কারখানায় কাজ করছিলেন। বয়লারটি ফেটেছে নীচের তলায়। অনেক শ্রমিকেরই দেহ চেনার অযোগ্য। ডিএনএ পরীক্ষা না করে তাঁদের দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়াও সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতদের মধ্যে এক পথচারী, রিকশাচালক ও একটি শিশুও রয়েছে। খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে মারা যায় সে। শিশুটি কী করে আহত হয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন