সুইস ব্যাঙ্কে থাকা কালো টাকা উদ্ধারে আরও তৎপর হচ্ছে ঢাকা

অ্যাডলফ হিটলারের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমে সুইৎজারল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন । দেশটা যুদ্ধে নেই। শান্তি অবাধ। এখন সেখানে নিশ্চিন্তে আছে নানান দেশের কালো টাকাও। উড়ে উড়ে গিয়ে সব সুইস ব্যাঙ্কের নীড়ে।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৬ ১৬:০৭
Share:

অ্যাডলফ হিটলারের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমে সুইৎজারল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন । দেশটা যুদ্ধে নেই। শান্তি অবাধ। এখন সেখানে নিশ্চিন্তে আছে নানান দেশের কালো টাকাও। উড়ে উড়ে গিয়ে সব সুইস ব্যাঙ্কের নীড়ে। পাচার করা টাকার হদিশ নিয়ে তা দেশে ফেরাতে চাইছে ভারতের মতো বাংলাদেশও। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিভাগ চিঠি পাঠিয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্ককে। জবাবে তারা জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তির নামে তথ্য চাইলে দেওয়া যেতে পারে, পুরো দেশের তথ্য দেওয়া অসম্ভব। অনুসন্ধানে ৫৬ বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে। তথ্য পেতে তাদের নামই পাঠান হচ্ছে।

Advertisement

সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের টাকা বেশি। পাকিস্তান কিন্তু নিরুত্তাপ। বাংলাদেশ বসে থাকবে না। কালো টাকার বাসা ভাঙতে চায়। সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশি ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানের নামে আছে ৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। তার সবটাই যে কালো এমন নয়, বৈধ টাকাও আছে। বাংলাদেশের নিয়মে বিধিবদ্ধভাবে বিদেশি ব্যাঙ্কে টাকা রাখতে বাধা নেই। গোলমাল কালো টাকায়। বেনামে টাকা রাখলেও ধরা মুশকিল। একমাত্র কর ফাঁকি, দুর্নীতি বা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ থাকলে অবৈধ আমানতকারীর সন্ধান মেলে। সেই খোঁজ চলছে। পেলেই ব্যবস্থা।

পণ্য আমদানিতে বেশি ছাড় আর পরিমাণ দেখিয়ে, রফতানিতে সেটা কমিয়ে, বেরিয়ে আসা। অতিরিক্ত টাকা পাঠানো হচ্ছে সুইস ব্যাঙ্কে। আমদানি রফতানি বাণিজ্যে স্বচ্ছতা ফেরাতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ সরকার। এই ব্যবসার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের দিকে কড়া নজর। সুইস ব্যাঙ্কে শুধু টাকা নয়, মূল্যবান রত্ন, সোনাও থাকছে। লকারে রাখা সে সব বস্তুর দামও কম নয়। যারা এ সব করছে তারা যদি নিজে থেকে ধরা দেয় শাস্তি কমবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে তিন জেলায় চার পুরোহিতকে খুনের হুমকি, কড়া প্রশাসন

প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়নি সুইৎজারল্যান্ড। যুদ্ধে সমর্থন নেই। সব সময় শান্তির পথে। আবার বিশ্বে কালো টাকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে টার্গেট সেই সুইৎজারল্যান্ডই। সুইস রাষ্ট্রপতি সিমোনেটা সোমারু প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, তাঁর দেশ কোনও অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত নয়। দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উন্নতি দুনিয়ার নজর কেড়েছে। টাকার সাদা-কালো বিচারের দায়িত্ব তাঁদের নয়। তবু এ সম্পর্কে যে কোনও দেশ সহযোগিতা চাইলে তাঁরা দিতে প্রস্তুত।

অনেক দেশে করের পরিমাণ কম। ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ড, সিসিলিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভিড় জমছে। নাম সর্বস্ব কোম্পানি খুলে সেখান থেকেই অর্থ পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, তারা পার পাবে না। সুইস ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা অর্থ থেকে ঋণ নিচ্ছে বহু দেশ। তার প্রয়োজন নেই বাংলাদেশের। বাংলাদেশিদের জমা টাকা উদ্ধার হলেই যথেষ্ট। টাকাটা সরকারের হাতে এলে উন্নয়নের কাজে লাগতে পারে। দেশের মানুষের টাকা দেশের কাজে লাগলেই তো ভাল। অবৈধভাবে ব্যক্তি সম্পদ বাড়ানোটা জাতীয় ক্ষতি। আর্থিক অপরাধীদের ঠিক পথে ফেরার আহ্বান জানান হয়েছে। আয়কর দফতর জানিয়েছে, কর ফাঁকির পরিমাণ অনেক কমেছে। রাজস্বও বাড়ছে। উন্নয়নমুখী দেশের নাগরিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ায় দরকার। তাঁদের সচেতনতাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন