পুলিশের হাতে আটক নাজিমউদ্দিন সামাদের হত্যাকারী জঙ্গি রশিদুন নবী (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় তিন মাস পরিকল্পনা করে ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী নাজিমউদ্দিন সামাদকে হত্যা করে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। এমন তথ্যই জানালেন ঢাকা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান। সোমবার সকালে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম জানান, নাজিমউদ্দিন সামাদকে হত্যার তিন মাস আগে পরিকল্পনা করে আনসার আল ইসলাম। নাজিমউদ্দিন মেসে থাকতেন। তাই বাসায় গিয়ে তাকে হত্যা করা সম্ভব নয় বলে মনে করে জঙ্গিরা। এ কারণে বাসায় আসা-যাওয়ার পথে নাজিমউদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। এর পর জঙ্গি সংগঠনটি নাজিমউদ্দিন সামাদকে হত্যার নির্দেশ পায়। তার নেতৃত্বে ঘটনার কয়েক দিন আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে একটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়। এর পর ৬ এপ্রিল রাতে রশিদুন নবীর নেতৃত্বে পাঁচ জঙ্গি সামাদকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
এর আগে রবিবার রাতে সামাদ হত্যায় জড়িত রশিদুন নবী ভূইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান নামে আনসার আল ইসলামের সদস্যকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি ও ডিবি পুলিশ। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘গ্রেফতারকৃত রশিদুন নবী হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে। রশিদুন নবীর স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ৬ এপ্রিল রাতে হামলা চালিয়ে দু’জন সামাদকে কুপিয়েছিল, তাদের মধ্যে এই রশিদুন নবীও ছিল। পাঁচ জনের কাছেই চাপাতি ছিল। তবে এক জনের কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। সে গুলি করে।’’
মনিরুল ইসলাম জানান, সামাদকে হত্যার কয়েক দিন আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে বাসাভাড়া নেয় জঙ্গিরা। এর পরে তারা সামাদের যাওয়া-আসার পথে কয়েক দিন সামাদকে অনুসরণ করে, অবশেষে ৬ এপ্রিল রাতে হামলা চালিয়ে হত্যা করে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৬ এপ্রিল রাতে পুরনো ঢাকার সূত্রাপুরের একরামপুর ট্রাফিক মোড়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের কয়েকজন সদস্য সামাদের ওপর প্রথমে চাপাতি দিয়ে হামলা চালায়। পরে গুলি করে তারা পালিয়ে যায় তারা। নাজিমউদ্দিন সামাদ ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ হত্যাকাণ্ড ছাড়াও প্রকাশক আহমেদুর রশিদ টুটুল হত্যাচেষ্টা ও জুলহাস মান্নান-মাহবুব তনয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও গ্রেফতারকৃত রশিদুন নবী জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি।
অন্য দিকে গ্রেফতারকৃত রশিদুন নবীকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠাবে পুলিশ। রিমান্ডে পেলে এ বিষয়ে তাকে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান মনিরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন