মার্চের ২৫ তারিখকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসাবে স্বীকৃতির জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশ জুড়ে গণহত্যা চালায়। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী শুধু ঢাকাতেই সে রাতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল পাক সেনারা।
বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের কথায়, ‘‘এক দিনে এত বেশি মানুষের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর আর কোনও দেশে কখনও ঘটেনি। এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে মাতৃভাষার স্বীকৃতির দাবিতে লড়াইকে রাষ্ট্রপুঞ্জ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা দিয়েছে। এ বার এই ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির লক্ষ্যে বিদেশ মন্ত্রক তৎপর হয়েছে।’’ তিনি জানান, যে সব দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবির পাশে ছিল, এই স্বীকৃতি আদায়ে তাদের সহযোগিতা সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন।
এই তৎপরতার অঙ্গ হিসাবে এই প্রথম বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনীতিক দফতরগুলিতে শনিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে গণহত্যা দিবস পালন করা হচ্ছে। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের দফতরে বিকেল চারটে থেকে আলোচনা সভা, গণহত্যা সংক্রান্ত ছবি ও তথ্যচিত্রেরও প্রদর্শন হবে। গণহত্যার শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠান হচ্ছে দিল্লির হাই কমিশন দফতরেও। তথ্যচিত্র প্রদর্শন ছাড়া হচ্ছে সভা। বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিনটি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু ওই দিন কোনও দেশে কোনও গণহত্যার ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশ চাইছে, ২৫ মার্চ বিশ্বের সব চেয়ে বড় গণহত্যার দিনটিকেই যেন আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বিশেষ অভিযান চালায়। সে রাতে স্বাধীনতাকামীদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়। ছাত্রাবাস, রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাটেও এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে সে দিন অজস্র মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার জন্য ঘিরে ধরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু বস্তি।