সংঘর্ষ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া কলেজ সরকারি অধিগ্রহণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহ কলেজ অধিগ্রহণের দাবিতে কলেজের ভিতরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় দু’জন নিহত হন। তাঁদের এক জন ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং অন্য জন স্থানীয় মাছবিক্রেতা সফর আলি। ঘটনার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফুলবাড়িয়া পুরসভায় এ দিন সকাল ৯টা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ থাকবে। এর ফলে সেখানে সভা-সমাবেশ সমেত সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হল। ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লীরা তরফদার এই খবর জানিয়েছেন। তবে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি রিফাত খান রাজীব দাবি করেন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও তাঁরা মারা যেতে পারেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফুলবাড়িয়া কলেজ সরকারি অধিগ্রহণের দাবিতে দুপুরে পুর এলাকায় আন্দোলনকারীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে পুলিশ।
সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা পরস্পরকে তাড়া করে। ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে আহত হন পথচারী মাছবিক্রেতা সফর আলি এবং সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সফর আলি মারা যান। সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদকে ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন বলে জানান ফুলবাড়িয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইমাম হোসেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-কলকাতা ট্রেন বাড়ল, এবার গতিও বাড়ুক
এ দিকে এই ঘটনার তদন্তের জন্য এ দিন সকালেই দু’টি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার এক দিন পরে এ দিন সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এডিএম আরিফ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে। ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মহম্মদ খলিলুর রহমান জানান, এই তদন্ত কমিটিকে সাতটি কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের উদ্যোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-দক্ষিণ (এএসপি) নূরে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে তিনটি কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।