—প্রতীকী চিত্র।
রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যা মামলার রায়ে ফাঁসি দেওয়া হল জেএমবির নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফকে। খুলনা জেলা কারাগারে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
শনিবারই খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর-ই-আলম গনমাধ্যমকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছিলেন। কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সকালে সরকারি ভবন থেকে জেলা জজ আদালতে যাওয়ার পথে দুই বিচারকের মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে হামলা চালায় জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) একদল জঙ্গি। হামলার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে।
ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ধরা হয় হামলাকারী জেএমবির সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন। এর পরে জেএমবির অন্যান্য শীর্ষ নেতারা আটক হন। ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতে চলে মামলার বিচার।
২০০৬ সালের ২৯ মে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ (ফারুক) ও আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফ মোট ৭জনের ফাঁসির সাজা দেন বিচারক।
তখন ৬ জঙ্গি কারাগারে থাকলেও পলাতক ছিল আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফ। আবেদনের পর ছয় জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ৩১ অগস্ট তাঁদের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে উচ্চ আদালত। ওই বছরের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হাইকোর্টের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছয় জঙ্গির জেল হাজতের আবেদন খারিজ করে দেন।
এর পর ২০০৭ সালে ৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি ছয় জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিলে ২৯ মার্চ রাতে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ছয় জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ২০০৭ সালের ১০ জুলাই এ মামলায় আরিফ ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার হন। ওই বছর জুলাই মাসে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরে আপিল বিভাগেও তাঁর সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আরিফ যে আবেদন করেছিলেন তা ২০১৬ সালের ২৮ অগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ খারিজ করে দেয়।
আর তারই মধ্য দিয়ে আরিফের মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে এক যুগ পর খুলনা কারাগারে কোনও দণ্ডিতের ফাঁসি কার্যকর হল। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল।