Bangladesh News

শুধু কঠোর হাতে দমন নয়, অনুতপ্ত জঙ্গিদের বন্ধুও হতে চান হাসিনা

বাঁচা যেমন তেমন, মরাটা মনের মতন। মরণ জ্যাকেটটা গায়ে চড়িয়ে বোতাম টিপলেই হল। পৃথিবী থেকে নিমেষে নিশ্চিহ্ন। বেহদিশ দেহ। খুঁজলে, এক আধ টুকরো মাংস মিললেও মিলতে পারে। মানব জমিনের মতো যাতে কোনও নাম ঠিকানা নেই। মেহমান হয়ে আসা, স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়া। দেশ দিয়ে তাকে চেনা যাবে না।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ১৩:১৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

বাঁচা যেমন তেমন, মরাটা মনের মতন। মরণ জ্যাকেটটা গায়ে চড়িয়ে বোতাম টিপলেই হল। পৃথিবী থেকে নিমেষে নিশ্চিহ্ন। বেহদিশ দেহ। খুঁজলে, এক আধ টুকরো মাংস মিললেও মিলতে পারে। মানব জমিনের মতো যাতে কোনও নাম ঠিকানা নেই। মেহমান হয়ে আসা, স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়া। দেশ দিয়ে তাকে চেনা যাবে না। তার নতুন ঠিকানা সন্ধানও অহেতুক। এটাই বাংলাদেশের জঙ্গিদের খামখেয়ালিপনা। যাওয়ার আগে দম্ভোক্তি, এই পৃথিবী শয়তানদের ডেরা। আমি চললাম স্বর্গে। পরম করুণাময়ের আশ্রয়ে, সেখানে অসুন্দরের স্থান নেই। মনোময় অপার্থিব জগতে কেবল ভরপুর আনন্দ। যে বলছে তার বয়স ২৫ থেকে ৩৫। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছে। ক্ষুধার অন্নের জন্য কোনও দিন কাঁদেনি। না চাইতেই সব কিছু পেয়েছে। ক্ষুধার্ত শিশুর কান্নায় ব্যতিব্যস্ত হতে হয়নি কখনও। বড় হতে না হতেই জঙ্গি নেতার সাহচর্য। নতুন পথ চেনা। যার শেষ স্টেশন জন্নাত।

Advertisement

আরও পড়ুন

হামলায় রুষ্ট আফ্রিকার জাতিবিদ্বেষের অভিযোগের জবাব দিল দিল্লি

Advertisement

জঙ্গি ট্রেনিংয়ের সার কথা, মেরে মরো। যাওয়ার আগে যতটা পার মানুষ খালাস কর। দুনিয়া কিছুটা খালি হোক। মানব বিরোধী অভিযানে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের পবিত্র মুহূর্তেও সিলেটের আতিয়া মহলে সামিল ছিল জঙ্গিরা। জঙ্গি প্রশিক্ষকদের কথা রাখতে পারল না। নির্বিচারে মানুষ না মেরেই মরতে হল। 'অপারেশন টোয়ালাইট' শেষে কম্যান্ডোরা ভবন থেকে টেনে বার করল ৪টি জঙ্গি লাশ। তার মধ্যে মহিলা এক। মহিলা জঙ্গিরা অনেকেই শিশু সন্তানের জননী। জঙ্গিপনার ব্যস্ততায় মাতৃত্বের পরোয়া নেই। সন্তানের প্রতি কী মায়ের দায়িত্ব কম, না সবচেয়ে বেশি। সেটা ভুললে চলে কী করে। ছেলেমেয়েকে অবহেলায় ফেলে বন্দুক ধরাটা কতটা সমীচীন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিস্থিতিটা উপলব্ধি করে জঙ্গিদের মুক্তির পথ খুঁজে দিতে চাইছেন। তিনি জানেন, অনেকেই ভুল গর্তে সেঁধিয়ে আর বেরনোর পথ খুঁজে পাচ্ছে না। কেউ কেউ গর্ত থেকে বেরোতে চেয়েও ভয়ে আটকে আছে। মনে করছে, এক দিকে জঙ্গি নেতৃত্বের চাপ অন্য দিকে বাংলাদেশ সরকারের দণ্ড। দুয়ের মাঝে চিঁড়েচ্যাপ্টা হওয়াটা যে আরও কষ্টকর। তাদের অনিশ্চয়তার শেষ চায় হাসিনা। সংসদে ঘোষণা করেছেন, বিপথগামীরা জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে এলে তাদের আইনি সহায়তা দিয়ে নিষ্কৃতীর রাস্তা সহজ করা হবে। তারা পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে। হাসিনা জানান, ভুল বুঝতে পেরে এর মধ্যেই বহু জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে। আইনি সংশোধনের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের কাজ চলছে। জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিতে যারা ঘর ছেড়েছিল, তারাও অনেকে ঘরে ফিরছে। জঙ্গিবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক প্রচারেই সেটা সম্ভব হয়েছে।

অন লাইনে জঙ্গি প্রচার বন্ধ হচ্ছে। জঙ্গি বিরোধী প্রচারে জোট বাঁধছে রাজনৈতিক সংগঠন, মসজিদের ইমাম, আলেম সমাজ শিক্ষক-ছাত্ররা, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, অভিভাবকরা। মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে বাড়ছে সম্মানজনক কাজের সুযোগ। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি তৈরির পথে। যার কাজ হবে, জঙ্গি কর্মকাণ্ডের তাৎক্ষণিক মোকাবিলা। জঙ্গিরা যাতে অপারেশন চালানোর সুযোগই না পায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন