শেয়ার বাজারের জোয়ারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ছে

বাংলাদেশের অর্থনীতির আকাশটা পরিষ্কার। আগের ঘোলাটে ভাবটা কেটেছে অনেক দিন। শেয়ারবাজার ডানা মেলেছে নির্বিঘ্নে। ঊর্ধ্বমুখী, অধরা উড়ান। ভ্যাবাচাকা খাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরাও। এতটা আশা করেননি। ছ'মাসেই ঝকঝকে উজ্জ্বল।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ১৬:৫০
Share:

ঊর্ধ্বমুখী শেয়ার বাজার.

বাংলাদেশের অর্থনীতির আকাশটা পরিষ্কার। আগের ঘোলাটে ভাবটা কেটেছে অনেক দিন। শেয়ারবাজার ডানা মেলেছে নির্বিঘ্নে। ঊর্ধ্বমুখী, অধরা উড়ান। ভ্যাবাচাকা খাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরাও। এতটা আশা করেননি। ছ'মাসেই ঝকঝকে উজ্জ্বল। বেশির ভাগ শেয়ারের দর বাড়ন্ত। বাড়ছে বাজার সূচক। কেনাবেচা, শেয়ারদর বা সূচকের চেয়ে বেশি। রেকর্ড ভাঙছে লেনদেনে। ঢাকা আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বিস্ময়কর আলেখ্য। এক দিনেই শেয়ারবাজারের লেনদেন দু'হাজার কোটি টাকা ছাড়াচ্ছে। দিনে দিনে উত্তরণ, আগের দিন যা ছিল পরের দিন পাল্টাচ্ছে। প্রধান সূচক একেক দিন ১০০ পয়েন্ট বেড়ে ৫৫৭৫ পয়েন্টে উঠছে। দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি শেয়ারের বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ায়, সূচক এতটা বেড়েছে। ২০১৩-র ২৭ জানুয়ারি চালুর পর এটাই সূচকের রেকর্ড। সংস্থার থেকে ব্যক্তির আগ্রহ শেয়ারবাজারে বেশি। ব্যাঙ্কের সুদ কমেছে। অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দিকেও টানটা আর নেই। শেয়ারবাজারকেই মুনাফার কেন্দ্রবিন্দু বলে মনে করা হচ্ছে। লেনদেনে ব্যক্তির চেয়ে প্রতিষ্ঠান পিছিয়ে। তাদের বিনিয়োগ মাত্র ২০ শতাংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন: যকের ধন নয়, পাতালে থরে থরে সাজানো নোট!

শেয়ারবাজার বা সূচক বৃদ্ধির তুলনায় লেনদেন অনেক। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) জানিয়েছে, তারা সব সময়েই চেয়েছে বাজারে লেনদেন বাড়ুক। লেনদেন বাড়লেই শেয়ারবাজার আর সূচক বাড়ে। এখন সেটাই হচ্ছে। ছ'মাস আগেও এটা অবিশ্বাস্য ছিল। দিনে হাজার কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হবে, টেকসইও হবে, এমন আশা কেউ করত না। বেশি বাড়লে আবার শঙ্কাও থাকে। বৃদ্ধি যাতে লাগামহীন হয়ে না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আইন-কানুন মেনে শেয়ার লেনদেন হলে বাজার টেকসই হবে। শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি এগোচ্ছে, রাজনৈতিক অঙ্গনও মেঘমুক্ত। এত দিন তার প্রতিফলন ছিল না শেয়ারবাজারে। উন্নতির গতি এখনও উদ্বেগজনক নয়। এই মুহূর্তে লাগাম টানার প্রয়োজন নেই। বিনিয়োগে একটু সতর্কতা দরকার। হঠাৎ ৩০টি শেয়ার দর দ্বিগুণ হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, ২০১০-এর মতো এখনও কিছু বন্ধ, দুর্বল কোম্পানির সহযোগী জুয়াড়িরা গুজব ছড়িয়ে কিছু শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে। ভাল কোম্পানির শেয়ার দর ১০ শতাংশ না বাড়লেও, এক মাসে কিছু শেয়ারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এসব শেয়ার দরে লাগাম টানতে হবে। মার্জিন ঋণ বন্ধ করার কথাও চিন্তা করা দরকার।

Advertisement

এখন শেয়ারের সূচক, লেনদেন বৃদ্ধির খবর পেয়ে ফুলের লোভে ভ্রমরের মতো বিনিয়োগকারীরা ছুটে আসছেন। যা অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। এ অবস্থা বজায় থাকলে শিল্পায়নে মূলধনের অভাব হবে না। উন্নয়নও ত্বরান্বিত হতে বাধ্য। লক্ষ্য এবার একটাই, শেয়ার বাজারের স্বচ্ছতা যেন বজায় থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন