পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জান্নাত। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের দীর্ঘতম মানুষ হিসেবে নাম আগেই উঠেছে। এখন সারা পৃথিবীর মধ্যেই দীর্ঘতম মানুষ হয়ে উঠেছেন জিন্নাত আলি। গিনেস বুকে সব থেকে লম্বা মানুষ হিসেবে এখনও নাম আছে তুরস্কের সুলতান কশেনের। কিন্তু তাঁর উচ্চতা আট ফুট তিন ইঞ্চি। সেখানে বাংলাদেশের কক্সবাজারের জিন্নাতের ২২ বছরেই উচ্চতা আট ফুট ছয় ইঞ্চি। অর্থাৎ গিনেস বুকে নাম ওঠা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
জিন্নতের বাড়ি বাংলাদেশের কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড়বিল গ্রামে। বাবা আমীর হামজার এক মেয়ে, তিন ছেলে। জিন্নাত তৃতীয় সন্তান। ছোটবেলায় আর পাঁচ জনের মতোই স্বাভাবিক ছিল জিন্নাতের বেড়ে ওঠা। বাড়ির লোকের বক্তব্য, ১২ বছর বয়স পর্যন্ত কোথাও কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেননি তাঁরা। কিন্তু তার পর থেকেই হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেন জিন্নাত। শেষ দশ বছর ধরে টানা বেড়ে চলেছেন তিনি। এখন তাঁর উচ্চতা দাঁড়িয়েছে ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি।
ভাইয়ের এই রেকর্ড উচ্চতা অবশ্য পরিবারের কাছে যতটা না গর্বের, তার থেকে বেশি আশঙ্কার। ভাই ইলিয়াস আলির কথায়, ‘জিন্নাতের প্রচুর খাবার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা দিতে পারি না।’ যদিও জিন্নাতের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: মন্ত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, জনতার উদ্দেশ্যে গুলি, সঙ্কট বাড়ল শ্রীলঙ্কায়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ‘‘জিন্নাতের মাথায় সম্ভবত টিউমার আছে, হরমোন সমস্যার কারণেই ওঁর উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও তিনি জিন্নাতের সমস্যা বুঝতে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জিন্নাত। ছবি: সংগৃহীত।
এই মুহূর্তে জিন্নাতকে রাখা হয়েছে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে লম্বা হওয়ার জন্য সাধারন হাসপাতালের বেডে তাঁর জায়গা হচ্ছে না। তাই নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। গত বুধবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে জিন্নাত আলীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কক্সবাজারের স্থানীয় সাংসদ। সেখানেই তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ২২২৪টি গাড়ি এক প্রাক্তন বিচারকের! জানেন কী ভাবে
এখন জিন্নাতের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপের দিকেই। তার ভাই জানিয়েছেন, ‘‘ডান পায়ের থেকে জিন্নাতের বাঁ পা একটু বেশি লম্বা। এই পায়ের গোড়ালি ফুলে গেছে। পায়ে জলও জমে যাচ্ছে, সঙ্গে মাঝেমধ্যেই অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় তাঁকে।
হাসপাতাল সূত্রের তথ্য, প্রতিদিন ১৮ জনের খাবার দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাধীন জিন্নাত আলীকে। কর্তৃপক্ষ তার খাবারের চাহিদা দেখেই এমন ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
(সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)