ছবি: সংগ্রহ।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর নামও উচ্চারণ এক সময়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল প্রায়। সেই দেশেই হাতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় ছবিটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উন্মুক্ত করা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবিটির উচ্চতা ৪৩ ফুট, প্রস্থ ৩৪ ফুট। ক্যানভাসের উপর এক্রেলিকে এই ছবিটি এঁকেছেন নানা বয়সের প্রায় দেড় শতাধিক শিল্পী। এঁদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববরেণ্য শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ হাশেম খান, রফিকুন নবি, নাজমা আক্তার, কামাল পাশা চৌধুরী, নবেন্দু সাহা, উম্মে আরাফাত জাহান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগারের কাছেই বিশাল একটি মঞ্চে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর এই প্রতিকৃতি আঁকা হয়েছে। আয়োজকদের আশা, এই শিল্পকর্ম সারা বিশ্বের বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে স্থান করে নেবে। এই প্রতিকৃতি আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় এই প্রতিকৃতির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.আখতারুজ্জামান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পাশে লেখা রয়েছে অন্নদাশঙ্কর রায়ের সেই বিখ্যাত দুটি লাইন-‘যতকাল রবে পদ্মা,মেঘনা,গৌরী, যমুনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘাতকেরা হত্যা করেছিল ১৯৭৫-এর ১৫ অগস্ট। তাঁর পরিবারের আর কোনও সদস্যই সে দিন ঘাতকের বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি, শুধু বাংলাদেশের বাইরে থাকাতে বেঁচে গিয়েছিলেন তার দুই সন্তান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ’৭৫ পরবর্তীকালে প্রায় দুই যুগ বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু নামটি উচ্চারণেও ছিল রাষ্ট্রের বাধা।
সরকারি সমস্ত সংবাদমাধ্যমে তাঁর নামও উচ্চারিত হয়নি। বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক এবং সব ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় উজ্বল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই বিশাল প্রতিকৃতি যে ঢাকায় স্থাপন করা হল, সেই শহরেই এক দিন বঙ্গবন্ধু নামটি উচ্চারণের জন্য কারাগারে যেতে হয়েছে দেশটির অজস্র রাজনৈতিক কর্মীকে।