Bangladesh News

বিসর্জনের পর দিনই তাজিয়া মিছিলে 'হায় হোসেন' রব

এক দিকে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের রেশ, অন্য দিকে মুসলিম শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে ‘হায় হোসেন’ রবে মহানবীর দৌহিত্র ইমাম হাসান ও হোসেনকে স্মরণ। ধর্মীয় সৌহার্দ্যের মধ্যেই দু’টি পৌরাণিক বেদনাবিধুর দিন পার করছে বাংলাদেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৬ ১৭:৫৪
Share:

শিয়াদের তাজিয়া মিছিল।

এক দিকে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের রেশ, অন্য দিকে মুসলিম শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে ‘হায় হোসেন’ রবে মহানবীর দৌহিত্র ইমাম হাসান ও হোসেনকে স্মরণ। ধর্মীয় সৌহার্দ্যের মধ্যেই দু’টি পৌরাণিক বেদনাবিধুর দিন পার করছে বাংলাদেশ।

Advertisement

১২ অক্টোবর পবিত্র আশুরা। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা। বরাবরের মত এ বারও কয়েকদিন আগে থেকেই আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে পুরনো ঢাকায়। আশুরার দিন প্রধান তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে পুরনো ঢাকার বিভিন্ন এলাকার শিয়ারা বুধবার সকাল থেকেই হোসাইনী দালান ইমামবাড়ার সামনে জড়ো হন। সাড়ে ১০টা নাগাদ ইমামবাড়ার সামনে থেকে ‘হায় হোসেন-হায় হোসেন’ মাতম তুলে শুরু হয় বিশাল তাজিয়া মিছিল।

হাজারো মানুষের শোক মিছিল লালবাগ, আজিমপুর এতিমখানা, আজিমপুর চৌরাস্তা, নিউ মার্কেট হয়ে ধানমণ্ডি ২ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে ‘কারবালা’ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অনেকের হাতেই দেখা যায় জরি লাগানো লাল আর সবুজ নিশান, মাথায় শোকের কালো কাপড়। কারবালার স্মরণে কালো চাঁদোয়ার নীচে কয়েক জন বহন করেন ইমাম হোসেনের (রা.) প্রতীকী কফিন।

Advertisement

মিছিলের সামনে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়া, দ্বিতীয় ঘোড়ার জিন রক্তের লালে রাঙানো। অন‌্যান‌্য বছর কারাবালার রক্তপাতের স্মরণে অনেকে মিছিলের মধ‌্যে ছুরি বা শিকল দিয়ে আঘাত করে নিজেদের দেহ থেকে রক্ত ঝরালেও এ বছর ওই ধরনের কোনও অস্ত্র বা দীর্ঘ লাঠি বহন নিষিদ্ধ ছিল।

গত বছর আশুরায় হোসাইনী দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় জঙ্গিদের বোমা হামলায় দু’জন নিহত হন। ওই অভিজ্ঞতার পর এ বার মিছিলে কোনও ধরনের নাশকতা যেন না ঘটে সে জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।

ইমামবাড়া ছাড়াও ঢাকার ফার্মগেইট, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর থেকে তাজিয়া মিছিল বের করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন শিয়ারা। তাজিয়া মিছিলে এ বার কোনও ছুরি বা অস্ত্র নিয়ে না আসলেও ব্লেড দিয়ে বুক ক্ষতবিক্ষত করেছেন অনুসারীরা। পুলিশের অনুরোধে ছুরি দিয়ে অনুসারীদের মাতম করতে দেখা যায়নি। তবে বুক চাপড়ে হায় হোসেন হায় হোসেন করে মাতম করছেন।

আশুরা উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি। সেই উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আলাদা আলাদা ভাবে বক্তব্য রেখেছেন। এই দিবস উপলক্ষে আগামিকাল বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন-সহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।

আরও খবর...

বাংলাদেশ: ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন