Bangladesh News

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরাতে ফিলিপিন্সের গড়িমসি

বাংলাদেশের চেয়ে ছোট ফিলিপিন্স। জনসংখ্যা ১০ কোটি। বাংলাদেশের অর্ধেক। এশীয় উপকূলের ৮০০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭,১০৭টি দ্বীপের দেশ। অধিকাংশ দ্বীপের নাম নেই।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ১৭:০৩
Share:

বাংলাদেশের চেয়ে ছোট ফিলিপিন্স। জনসংখ্যা ১০ কোটি। বাংলাদেশের অর্ধেক। এশীয় উপকূলের ৮০০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭,১০৭টি দ্বীপের দেশ। অধিকাংশ দ্বীপের নাম নেই। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগ কঠিন। সরাসরি যাওয়া যায় না। সিঙ্গাপুর বা ব্যাঙ্ককে নেমে ফের বিমান ধরতে হয়। যা পৌঁছে দেয় ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায়। দূরত্বটা শুধু ভৌগোলিক নয়, রাজনৈতিক আর সাংস্কৃতিকও। এশিয়ার দেশ হলেও আচার আচরণে আলাদা। সার্কের সঙ্গে মেলে না। বাংলাদেশের সমস্যা শ্রীলঙ্কা যতটা বুঝতে পারে, ফিলিপিন্স ততটা নয়। সম্পর্কটা দূরের। সার্ক সদস্যদের আত্মীয়তার ধরনটা আলাদা। এক দেশ অন্য দেশের বিপদে ঝাঁপাতে কসুর করে না। বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ২ কোটি ডলার উড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। তাদের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে, রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপাল সিরিসেনা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেন। অবিলম্বে ডলার ফেরত যায় ঢাকায়। তস্কররা সার্ক মৈত্রীর নমুনা দেখে অবাক। দু'দিনের কলম্বো সফরে ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শ্রীলঙ্কাকে আরও বেশি করে কাছে টেনেছেন। উন্নয়নে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। সঙ্কটে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোদীর সম্মান রেখেছে শ্রীলঙ্কা। মোদীর সফরের সময়েই চিন একটা সাবমেরিন পাঠাতে চেয়েছিল কলম্বোয়। শ্রীলঙ্কা সরাসরি না করে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার সাহস দেখে বিস্মিত চিন। শ্রীলঙ্কায় বিমানবন্দর, রাস্তা, রেলপথ, বন্দর তৈরিতে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো অর্থ ঢেলেছে তারা। তা সত্ত্বেও সাবমেরিন উপহার প্রত্যাখ্যানে চিন্তা। শ্রীলঙ্কা জানে, সার্ক দেশগুলোকে দিয়ে ভারতকে ঘিরতে চাইছে চিন। সেটা হতে দেবে না কলম্বো। চিন যতই সাহায্য করুক, তাদের অপপ্রয়াসে সমর্থন নয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘জাস্টিসিয়া’ সরানোর প্রতিবাদ বাংলাদেশে

এ সবের তাৎপর্য ফিলিপিন্সের বোধগম্য হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের রিজার্ভ চুরির বড় অঙ্কটা ফিলিপিন্সে ঢুকেছে। সরকারি তৎপরতা থাকলে এত দিনে হাতানো অর্থ ফেরত আসত। এক বছর তিন মাস হয়ে গেল এখনও ফিলিপিন্স সরকার প্রায় নির্বিকার। আদালতে মামলা চলছে। তার নিষ্পত্তিও বিশ বাঁও জলে। জাপানের ইয়োকোহামায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে ফিলিপিন্সের অর্থমন্ত্রী কালোর্স ডোমিংগুয়েজ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত পাওয়া সহজ হবে না। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর পরিণতি জানা যেতে পারে। স্বদেশের হয়ে সাফাই গেয়ে ডোমিংগুয়েজের ঘোষণা, ফিলিপিন্সে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন কঠোর করা হচ্ছে। আইনের সংস্কার চলছে, সেটা হলে ক্যাসিনোগুলোকে আইনের আওতায় আনা যাবে। তারা এত কিছু করছেন একমাত্র বাংলাদেশের অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা করা ছাড়া। ফিলিপিন্সের ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের থেকে এক কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা গেছে। সে দেশে এখনও গচ্ছিত ৬ কোটি ডলারের বেশি। সরকার উদ্যোগী হলে সেটা ফেরত পাওয়া কঠিন ছিল না।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন