দুর্নীতি ও ঋণের ফাঁদ নিয়ে হুঁশিয়ারি ঢাকাকে

একাত্তরে স্বাধীনতার পরে যে দেশকে ব্যঙ্গ করে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এ বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:২০
Share:

বাংলাদেশ হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি।

উন্নতি কম হয়নি বাংলাদেশের, কিন্তু মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিতে লাগাম পরাতে ব্যর্থ হলে তা ধরে রাখাটা বড় সমস্যা হতে পারে। আর রয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে বিদেশি ঋণের ফাঁদ। তাতে পা দিলে শ্রীলঙ্কা বা মায়ানমারের মতো পেছিয়ে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। সদ্য উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণের সাফল্য উদযাপনে সোমবার কলকাতায় একটি আলোচনা চক্রে সমাজ বিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদেরা এই সতর্কবার্তাই শোনালেন বাংলাদেশকে।

Advertisement

একাত্তরে স্বাধীনতার পরে যে দেশকে ব্যঙ্গ করে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এ বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। যে সব সূচকের ভিত্তিতে এই অর্জন, বাংলাদেশকে তা ধরে রাখতে হবে আরও ৬ বছর। তবেই স্থায়ী ভাবে উন্নয়নশীল দেশের তকমা দেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি নিশ্চিত, বাংলাদেশ তা পারবে। কারণ রাষ্ট্রপুঞ্জের এই ঘোষণায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতি বিশ্বের নজর কাড়বে, আরও লগ্নি আসবে সে দেশে। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারলে, স্থায়ী তকমা অর্জন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কর্তা শেখ ফজলে ফাহিম এবং বাংলাদেশ ইকনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জামালুদ্দিন আহমেদও বোঝালেন, হাজার রাজনৈতিক সঙ্ঘাতের মধ্যেও এক টানা ৩০ বছর অর্থনৈতির প্রগতি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

সমাজবিজ্ঞানী রাজাগোপাল ধরচৌধুরীও মহিলা উন্নয়ন, সাক্ষরতার হার, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার, বাড়িতে শৌচাগারের মতো সামাজিক সূচকগুলিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁর কথায়, এইসব সূচকে ভারতের থেকেও এগিয়ে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার সরকার ১০ বছরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে যে ভাবে এগিয়েছেন, তার সঙ্গে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াকে যে ভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, তা উন্নয়নশীল দেশের তকমা পেতে সহায়ক হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর হিসাবে দুর্নীতিদুষ্ট দেশের তালিকায় এখনও বাংলাদেশ প্রথম দিকে। ধরচৌধুরীর প্রস্তাব, এ বার দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ‘জ়িরো টলারেন্স’ ঘোষণা করুন হাসিনা। সেই সঙ্গে ঋণের ফাঁদ নিয়েও সতর্ক করেন। বন্দর গড়তে চিনের থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে সেই বন্দর কার্যত চিনের হাতে ছেড়ে দিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারকে। সুতরাং সতর্ক হোক ঢাকা।

Advertisement

কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাস ও মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স-এর যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভায় রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসান ও বিশাল ঝাঝারিয়াও দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নানা দিক নিয়ে কথা বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন