Bangladesh News

বাংলাদেশ-রাশিয়ায় যাতায়াত ভিসা ছাড়াই

বিশ্বের বৃহত্তম দেশ হয়েও জনসংখ্যায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে রাশিয়া। সে দেশের মাটিতে মানুষ মাত্র সাড়ে চোদ্দ কোটি, যেখানে বাংলাদেশে বিশ কোটি। সবার ওপরে মানুষ। অন্য সম্পদ তার কাছে কিছু না। সেই জনশক্তির জোরে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ১৬:৫৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

বিশ্বের বৃহত্তম দেশ হয়েও জনসংখ্যায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে রাশিয়া। সে দেশের মাটিতে মানুষ মাত্র সাড়ে চোদ্দ কোটি, যেখানে বাংলাদেশে বিশ কোটি। সবার ওপরে মানুষ। অন্য সম্পদ তার কাছে কিছু না। সেই জনশক্তির জোরে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। টেক্কা দিচ্ছে উন্নত দেশকেও। আর পাঁচ বছরে মধ্যম আয়ের দেশ হবে। পরের ধাপে উন্নত দেশের সারিতে। বাংলাদেশের অগ্রগতি রাশিয়ার নজরে। তারা বরাবরই বাংলাদেশের শুভাকাঙ্খী। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে ছিল। রাশিয়া তখন দ্য ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোস্যালিস্ট রিপাবলিক। রাষ্ট্রনেতা লিওনিড ব্রেজনেভ। সেই সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সুপ্রিম সোভিয়েতের প্রেসিডিয়ামে চেয়ারম্যান ছিলেন নিকোলাই পদগরনি। বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ছিল তাঁর হার্দিক সম্পর্ক। আমেরিকায় রিপাবলিকান নেতা প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তখন পাকিস্তান দরদী। মুক্তি যুদ্ধের রাশ টানতে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কথাটা পদগরনির কানে তুলতেই তুলকালাম। পাল্টা ব্যবস্থা নিতে তৈরি মস্কো। পশ্চাৎপদ আমেরিকা। বন্ধুত্বের পরীক্ষা তো বিপদের দিনেই। সেই মৈত্রী আজ সুদে আসলে বেড়েছে অনেকটাই।

Advertisement

রাশিয়া দু’হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশিদের বরণ করতে প্রস্তুত। দু’দেশের মানুষের যাওয়া আসায় আর ভিসার দরকার নেই। পাসপোর্ট থাকলেই হল। যোগাযোগে তার চেয়ে উদার ব্যবস্থা আর কী হতে পারে। আপাতত সুযোগটা সীমাবদ্ধ থাকবে কূটনৈতিক আর অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের মধ্যে। তাদের যাতায়াতটা সড়গড় হলে সুযোগটা সর্বজনীন হবে। বাংলাদেশিরা তখন নির্দ্বিধায় শুধু পাশপোর্ট হাতে নিয়েই ঢাকা থেকে উড়ে গিয়ে মস্কো বা সেন্টপিটার্সবার্গে নামতে পারবেন। সেখান থেকেও রাশিয়ার মানুষ ঢাকা সফর করতে পারবেন ভিসা ছাড়াই। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় যোগ দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলি আর রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ২২ সেপ্টেম্বর ভিসা চুক্তিতে সই করেছেন। সব ইস্যুতেই রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার পাশে বাংলাদেশ।

ক্রিমিয়ায় উপদ্বীপ নিয়ে একটু বেকায়দায় রাশিয়া। ২০১৪তে ইউক্রেন বিপ্লবে দেশের সরকার ভাঙে। রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ায় যোগ দেয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় রাশিয়ার এই কাজের বিরোধিতায় প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংকটে পড়ে রাশিয়া। তার থেকে বেরোনর প্রয়াস অব্যাহত। সঙ্গী দেশের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশ সঙ্গতি আর ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। সমর্থন ন্যায়ের দিকে। বাংলাদেশের ভূমিকাকে অভিনন্দন জানিয়েছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েতের ৭৫ শতাংশ এলাকা, ৫০ শতাংশ মানুষ নিয়ে নতুন রাশিয়া। সমানতালে উন্নয়ন চালাচ্ছে কৃষি আর শিল্পে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশে রাশিয়ার সব থেকে বড় অবদান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ। কেন্দ্রটি হলে বিদ্যুতের সমস্যা আর থাকবে না।

Advertisement

দিনে দিনে রাশিয়া অনেক বদলেছে। ১৯৯৭০-এর জুলাইতে রুশ সংসদ ইসলাম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি ধর্মকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিরোবিজান এলাকা ইহুদিদের স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত। রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের বাংলাদেশ সফর শুরু আগামী বছরের গোড়াতেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খোলার ইঙ্গিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর চুক্তি হবে একাধিক বিষয়ে। সব দিক খতিয়ে দেখতে ঢাকায় প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে রাশিয়া। সম্পর্কের নতুন মলাটটা তৈরি করবেন তাঁরাই।

আরও পড়ুন

শক্ত বন্ধনের বার্তা দিয়ে ঢাকা ছড়লেন চিনা রাষ্ট্রপতি

কালার প্যালেট একই থাকে, শুধু বদলে যায় শেড

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন