প্রতীকী ছবি।
দুনিয়ার তাবড় টেক জায়ান্ট সংস্থায় বাড়ছে অনিশ্চয়তা। যখন-তখন ছাঁটাইয়ের কোপে পড়ছেন সেখানকার বিপুল সংখ্যক কর্মী। চাকরির নিরাপত্তা নেই গুগ্ল, মাইক্রোসফ্ট, অ্যামাজ়ন এবং ক্লাউডস্ট্রাইকের মতো সংস্থাতেও। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত প্রযুক্তিবিদ ও তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের কোনও আশার আলো দেখাতে পারেননি বাজার বিশ্লেষকেরা। উল্টে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো বহুজাতিক টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি কর্মীসংখ্যা আরও হ্রাস করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন তাঁরা।
মার্কিন স্টার্টআপ সংস্থা ‘লেঅফডটফি’র দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত চাকরি হারিয়েছেন ১৩০টি কোম্পানির ৬১ হাজারের বেশি কর্মী। এর মধ্যে মাইক্রোসফ্ট একাই ছাঁটাই করেছে ছ’হাজার জনকে। ২০২৩ সালের পর সংশ্লিষ্ট বহুজাতিক টেক জায়ান্ট সংস্থাটিতে আর কখনওই একসঙ্গে এত কর্মী কাজ হারাননি। গত ১৩ মে ওই বিপুল ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করে মাইক্রোসফ্ট। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেটের অন্ত দু’হাজার জন রাতারাতি কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন।
অন্য দিকে গত কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিক ভাবে কর্মীসংখ্যা কমিয়ে আসছে গুগ্ল। এ বছরের মে মাসের গোড়ায় ২০০ জনকে ছাঁটাই করে এই মার্কিন সার্চ ইঞ্জিন। চাকরিহারাদের প্রায় সকলেই বিজ্ঞাপন এবং সেল্স দফতরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর আগে পিক্সেল, অ্যান্ড্রয়েড, ক্রোম এবং ক্লাউড বিভাগ থেকে কর্মী ছাঁটাই করেছিল গুগ্ল। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে একসঙ্গে ১২ হাজার কর্মীকে কাজ থেকে বসিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের এই জনপ্রিয় প্রযুক্তি সংস্থা।
গত কয়েক বছর ছাঁটাই বন্ধ থাকলেও ফের সেই রাস্তায় ফিরে এসেছে অ্যামাজ়ন। এ বছর ডিভাইস এবং পরিষেবা বিভাগের ১০০টি পদই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। সেই তালিকায় রয়েছে অ্যালেক্সা, কিন্ডল এবং জুক্স। তবে অ্যামাজ়ন থেকে মোট কত জন চাকরি হারিয়েছেন বা হারাতে চলেছেন, সেই সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পৌঁছে পাঁচ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করে সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ক্রাউডস্ট্রাইক। দীর্ঘমেয়াদি লাভের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি থেকে এ ভাবে গণহারে চাকরি যাওয়ার নেপথ্যে একাধিক কারণকে চিহ্নিত করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, গুগ্ল বা মাইক্রোসফ্টের মতো সংস্থার রাজস্বের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। অন্য দিকে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক অনিশ্চয়তার জেরে ব্যবসায়িক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই সমস্ত সংস্থা। পাশাপাশি কৃত্রিম মেধা বা এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি প্রথাগত কর্মসংস্কৃতির উপর প্রভাব ফেলছে। ফলে দিন দিন বাড়ছে ছাঁটাই।