সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা বা মোবাইল সংযোগ নেওয়ার জন্য আধার আর বাধ্যতামূলক নয়। সেই সূত্রেই কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রক জানিয়েছে, ডাকঘরে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক হবে না আধার।
অর্থ মন্ত্রকের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলি রূপায়িত হয় ডাকঘর ও ব্যাঙ্ক মারফত। বিনিময়ে সরকারের থেকে কমিশন পায় ডাক বিভাগ ও ব্যাঙ্ক। তবে এখনও এ ক্ষেত্রে ডাকঘরের চাহিদাই বেশি। সম্প্রতি যোগাযোগ মন্ত্রকের অধীন কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর (এসবি-১) পি এল মীনা দেশের সব সার্কল প্রধানদের এক নির্দেশে জানিয়েছেন, ডাকঘরে ওই সব প্রকল্প চালুর জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে কিংবা কোনও সার্টিফিকেট কিনতে আধার আর বাধ্যতামূলক নয়। অন্যান্য স্বীকৃত সরকারি নথি দিয়েই সেই কাজ সারা যাবে। তবে চাইলে কেউ আধার দিতেই পারেন।
ব্যাঙ্কের মতো ডাকঘরেও এক সময় গ্রাহকদের আধার জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি শীর্ষ আদালত বলে, পরিষেবা দেওয়ার যুক্তিতে কোনও বেসরকারি সংস্থাই পরিচয় যাচাইয়ের জন্য গ্রাহককে তা জানাতে বাধ্য করতে পারবে না। শুধু সরকারি ভর্তুকি ও সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা নিতে চাইলে আধার থাকতে হবে। তার পরেই ব্যাঙ্কগুলি জানায়, যে অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি বা সামাজিক প্রকল্পের টাকা জমা পড়ে, শুধু তার সঙ্গে গ্রাহকের আধার যুক্ত থাকতে হবে। না হলে তা লাগবে না। স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য।
এর আগে ডাকঘরে অ্যাকাউন্ট খুলতে বা এনএসসির মতো সার্টিফিকেট কিনতে আধার বাধ্যতামূলক হওয়ায় হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন বহু গ্রাহক। বিশেষত আধার না থাকায় সমস্যায় পড়েন প্রবীণদের অনেকে। ডাক বিভাগের এই নির্দেশে সেই হয়রানি বন্ধ হবে, মত ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নির্মল দাসের। তিনি বলেন, ‘‘স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আধার সমস্যায় অনেকেই মুখ ফেরাচ্ছিলেন। আশা, নির্দেশ ঠিক মতো কার্যকর হবে।’’
তবে ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, বেশ কিছু গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে রান্নার গ্যাসের মতো ভর্তুকি জমা পড়ে। কেউ যদি আগামী দিনেও ডাকঘরের অ্যাকাউন্টেই ভর্তুকি বা সরকারি আর্থিক সুবিধা পেতে চান, তা হলে তাঁর আধার তথ্য জমা দিতে হবে।