কেন্দ্রের নোট বাতিলের পরে চরম ভোগান্তি দেখেছে আবাসন শিল্প। এ বার সেই সঙ্কটের জের কাটাতে আবাসন শিল্পের সামনে রুপোলি রেখা হয়ে দেখা দিচ্ছে কম ভাড়ায় বসবাসের বাড়ি।
কেন্দ্র বাস্তবায়িত করতে চলেছে প্রস্তাবিত ন্যাশনাল আর্বান রেন্টাল হাউজিং নীতি। মূলত নিজেদের শহর বা গ্রাম ছেড়ে অন্য শহরে কাজ করতে আসা সাধারণ মানুষের মাথার উপরে ছাদ জোটানোই যে নীতির লক্ষ্য বলে দাবি তাদের। এর আওতায় বাজার দরের তুলনায় কম ভাড়ায় থাকার বাড়ি ও সেই বাড়ি ভবিষ্যতে কিনে নেওয়ার সুবিধাও পাবেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ। আর এই নীতির হাত ধরেই নতুন বাজার তৈরি হওয়ার আশা করছে আবাসন শিল্প।
নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের দাবি, ভাড়ার জন্য বাড়ি তৈরি শহরের সামাজিক পরিকাঠামো তৈরির অংশ হিসেবেই বিবেচিত হওয়া উচিত। রাস্তাঘাট, স্কুল, হাসপাতালের মতো এ ধরনের আবাসনও নাগরিক পরিকাঠামোর অঙ্গ বলে মনে করেন ক্রেডাই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা। তাঁর দাবি, দেশে সব বড় শহরেই নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের উপযুক্ত ভাড়া বাড়ির বিপুল ঘাটতি আছে।
সরকারি পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছে এই ঘাটতির কথা। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ২৭ শতাংশ মানুষ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। এবং ভাড়া বাড়ির সিংহভাগই অসংগঠিত ক্ষেত্রের দখলে। অর্থাৎ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটের মধ্যে নেই আইনি চুক্তি। নেই এলাকাভিত্তিক ও বাড়ির মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট অঙ্কের ভাড়া। অসংগঠিত বলেই ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী ১ কোটির বেশি বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অথচ ভিন্ রাজ্যে রুজি-রুটির খোঁজে আসা মানুষ মাথার উপরে ছাদ জোটাতে নাজেহাল।
চাহিদা ও সরবরাহের এই ফারাক ঘোচাতে কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে এ ধরনের পরিকাঠামো গড়তে এগিয়ে আসুক আবাসন শিল্প। প্রস্তাবিত নীতিতে এ ধরনের প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন কর ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবাসন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর দাবি, ৩০% মানুষ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। এক তৃতীয়াংশ মানুষ ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। এঁদের কথা মাথায় রেখেই এই নয়া নীতি তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রাজ্য ক্রেডাইয়ের কর্তা নন্দু বেলানির দাবি, সরকারি নীতির হাত ধরে খুলে যাবে নতুন বাজার। তবে এই নীতি কার্যকর করতে নতুন ভাবনাচিন্তা নিয়ে রাজ্যকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আবাসন এই শিল্পের বাজারকে চাঙ্গা করেছে, সে ভাবেই ভাড়া বাড়ি প্রকল্প লাভজনক হয়ে উঠতে পারে।’’