ইরানের তেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

সমস্যা হবে না, দাবি কেন্দ্রের

ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পরেও তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারত-সহ আটটি দেশকে ছ’মাসের ছাড় দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সোমবার ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ১ মে থেকে সেই সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৭
Share:

ইরানে লাভান তেল শোধনাগারে চলছে উত্তোলন। এএফপি

ইরান থেকে অশোধিত তেলের আমদানি বন্ধ হলেও জোগানের বিকল্প রাস্তা আগে থেকেই তৈরি রয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়ে দিল কেন্দ্র। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, তাতে দেশের বাজারে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে কি? এই প্রেক্ষিতে ভোটের বাজারে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করেনি কংগ্রেস।

Advertisement

ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পরেও তেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারত-সহ আটটি দেশকে ছ’মাসের ছাড় দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু সোমবার ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ১ মে থেকে সেই সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে। এর পরেও যারা ইরানের তেল কিনবে, নিষেধাজ্ঞা চাপবে তাদের উপরেও। এর জেরে তৈরি হয়েছে তেলের জোগানে সঙ্কটের আশঙ্কা। ফলে সোমবারের পরে মঙ্গলবারও বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বেড়েছে। অনেকের আশঙ্কা, ভারতের বাজারে পেট্রল-ডিজেলের দামেও এর প্রভাব পড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং ইন্ডিয়ান অয়েলের চেয়ারম্যান সঞ্জীব সিংহের আশ্বাস, দেশের সংশোধনাগারগুলিতে জোগানের বিকল্প রাস্তা তৈরি রয়েছে।

গত এক মাসে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় পাঁচ ডলার বেড়েছে। এই অবস্থায় বিশ্ব বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সেই দাম আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতে ভোটপর্বের মধ্যে তার প্রভাব পড়লে ছেঁকা লাগতে পারে আমজনতার পকেটে। অনেকের বক্তব্য, দাম নিয়ে বিশেষ কিছু বলা কেন্দ্রের পক্ষে এখন সম্ভব নয়। তাই জোগান নিয়েই এখন আশ্বস্ত করতে চাইছে তারা। পাশাপাশি বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, সমাধান সূত্র খুঁজতে আমেরিকা-সহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে ভারত।

Advertisement

ঘটনা হল, যখন ইরান থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে ছাড় মিলেছিল, তখন তাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কূটনৈতিক জয় বলে দাবি করেছিল বিজেপি। মঙ্গলবার বিরোধীদের প্রশ্ন, সে ক্ষেত্রে আজকের ঘটনা কি কূটনৈতিক পরাজয় নয়? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, এর ফলে অশোধিত তেলের পাশাপাশি দেশে জ্বালানির দামও বাড়বে। রণদীপ সুরজেওয়ালার দাবি, ইরানের চাবাহার বন্দর নির্মাণে ভারত লগ্নি করেছিল কংগ্রেসের আমলেই। তাই তেলের দাম মেটানোর ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পেত ভারত। এ বার তা মিলবে না।

বস্তুত, এপ্রিলে অশোধিত তেলের দাম চড়লেও পেট্রল-ডিজেলের দৈনিক দাম খুব একটা বাড়েনি। আবার গত তিন দিন কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে স্থির রয়েছে জ্বালানির দর। অদূর ভবিষ্যতে কী হয় সে দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল। উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এম কে রবিচন্দ্রনের মতে, অশোধিত তেলের দাম বাড়তে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে মূল্যবৃদ্ধির উপরে। তবে স্বল্পমেয়াদে তেলের দাম কী হবে তা নির্ভর করবে ওপেক গোষ্ঠী ইরানের তেলের লোকসানের কতটা পুষিয়ে দিতে পারে, তার উপর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন