ব্যবসা-বাণিজ্য শূন্য। অথচ জমা-খরচ ছাড়িয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
৩৫ হাজার ভুয়ো সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নোট বাতিলের পরে লেনদেনের এই ছবিই নজরে এসেছে কেন্দ্রীয় কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকের। সরকারি বিবৃতিতে রবিবার এই বেহিসেবি লেনদেনের কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, এই সব সংস্থার ৫৮ হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে ব্যবহার করে ১৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি নগদে জমা দেওয়া হয়, পরে ওই একই অঙ্ক তুলেও নেওয়া হয়। এই মুহূর্তে সংস্থাগুলির আর অস্তিত্বও নেই। কারণ, ভুয়ো সংস্থা হিসেবে সেগুলির নাম ইতিমধ্যেই কাটা গিয়েছে সরকারি নথি থেকে।
কালো টাকা ও বেআইনি লেনদেন রুখতে সম্প্রতি ধরপাকড় শুরু করে কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক। তাদেরই জালে ধরা পড়েছে ২.২৪ লক্ষ সংস্থা, কমপক্ষে গত দু’বছর ধরে যাদের কারবার শূন্য। সকলেরই নথিভুক্তি বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্র, যে-তালিকায় রয়েছে ওই ৩৫ হাজার ভুতুড়ে সংস্থা। তাদেরই লেনদেনই ফুলেফেঁপে ওঠে গত ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের ঠিক পরে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, কালো টাকা সাদা করতেই কাজে লাগানো হয়েছে ওই সব সংস্থার অ্যাকাউন্ট। আর, সেই কারণেই ওই সব লেনদেনের তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের কাছে।
ভুতুড়ে
• অন্তত দু’বছরের বেশি কারবার বন্ধ ২.২৪ লক্ষ সংস্থার
• নথিভুক্তি বাতিল করেছে কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক
• গত বছরের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের পরে ওই তালিকায় থাকা ৩৫ হাজার সংস্থার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নগদ জমা ১৭ হাজার কোটি
• পরে তুলে নেওয়া টাকার অঙ্কও একই
• একটি সংস্থার ২১৩৪টি অ্যাকাউন্ট থাকার নজিরও রয়েছে
• পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে ৩.০৯ লক্ষ ডিরেক্টরের
• সব তথ্য পাঠানো হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকে
তালিকায় এমন একটি সংস্থাও রয়েছে, যেটির গত ৮ নভেম্বর জমার অঙ্ক ছিল শূন্যের নীচে। অথচ নোটবন্দির পরে ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টে নগদে জমা পড়ে ২৪৮৪ কোটি টাকা। তুলেও নেওয়া হয় সমপরিমাণ অর্থ। অন্য দিকে, এমন একটি সংস্থাও নজরে এসেছে, যেটির ২১৩৪টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে!
কেন্দ্রের আতস কাচের নীচে ধরা পড়া মোট ২.২৪ লক্ষ ভুয়ো সংস্থার ৩.০৯ লক্ষ ডিরেক্টরকেও তাঁদের পদ হারাতে হয়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই সব সংস্থার নথিভুক্তি বাতিলের পাশাপাশি তাদের কাজকর্মেও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এর আওতায় রয়েছে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত লেনদেন এবং সম্পত্তি বিক্রি ও হাতবদল।