অপেক্ষা: ‘নতুন উড়ানের’ জন্য চোখ এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
ধারের বোঝায় জেরবার এয়ার ইন্ডিয়ার (এআই) ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার উত্তর মিলতে পারে শীঘ্রই। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটি বেসরকারিকরণের জন্য সম্ভবত খুব দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
সরকারি সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে আলোচনার পালা শেষ। এ বার সেই প্রসঙ্গ উঠবে মন্ত্রিসভায়। আর সেখানেই মিলতে চলেছে নীতিগত সায়। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, প্রাথমিক এই সম্মতির পরে শুরু হবে এআই ও তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি এবং দেনার বোঝা ছাঁটার উপায় নিয়ে আলাপ-আলোচনা। কারা সংস্থা কিনতে পারে, তা ঠিক করবে অর্থ ও বিমান মন্ত্রক। বাছবে সম্ভাব্য ক্রেতাকে। বিক্রির পদ্ধতি, এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে জমি, বাড়ি বা অন্য সম্পত্তি একলপ্তে বেচা হবে নাকি আলাদা ভাবে, নেওয়া হবে সেই সব সিদ্ধান্ত। খুঁজে বের করা হবে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি দেনা-সমস্যা সমাধানের পথও। এরপর ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য উঠবে এআই বিক্রির বিষয়টি। তখনই হাতবদলে বসবে চূড়ান্ত সিলমোহর। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে এক বছর লেগে যেতে পারে।
সময় যা-ই লাগুক, মোদী সরকার যে এআই বেচতে বদ্ধপরিকর, মঙ্গলবার তা ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন জেটলি। এবিপি নিউজের জিএসটি সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘বেসরকারিকরণই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ তা বিপুল লোকসানে চলছে। এর পিছনে পয়সা খরচ না করে, সেই অর্থ দেশ গঠনের কাজে লাগানো উচিত।’’ নীতি আয়োগ-ও প্রাথমিক ভাবে সংস্থা বিক্রির সুপারিশ করেছে। তবে পুরো হাতবদলে আপত্তি আছে বিমান মন্ত্রকের। তারা চায়, সংস্থার বিলগ্নিকরণ করা হোক। মাঝখানে সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে শোনা গিয়েছে টাটাদের নামও।
জেটলি অবশ্য আজ বলেন, ‘‘বেসরকারি বিমানের ভাড়া কমছে। ৮৬% যাত্রীই সেগুলিতে চড়ছেন। ভবিষ্যতে ১০০% যাত্রীই তাতে যাতায়াত করতে পারবেন।’’
কেন্দ্র ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে আর এয়ার ইন্ডিয়া চালাতে চায় না। তবে চলতি অর্থবর্ষেই হাত ধুয়ে ফেলা সম্ভব হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তাই ক্রেতা না-পাওয়া পর্যন্ত সরকারকে তা টানতেই হবে।
তাদের বিশ্বাস, আগামী দিনে দেশীয় কোনও সংস্থা একা এয়ার ইন্ডিয়া কিনতে আগ্রহী না হলেও, বিদেশের কারও সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগোতে পারে। বিশেষত, বিমান পরিবহণে যেখানে ৪৯% বিদেশি লগ্নি অনুমোদিত।
বিমান সংস্থাগুলির আন্তর্জাতিক সংগঠন স্টার অ্যালায়েন্সের সদস্য এআই। হিথরোর মতো বিমানবন্দরেও তাদের বিমান রাখার জায়গা আছে। হাতে সম্পদ যথেষ্ট। তাই বিপুল দেনা সত্ত্বেও সে সব মাথায় রেখে দেশি-বিদেশি সংস্থা এআই নিয়ে আগ্রহ দেখাবে বলে আশা কেন্দ্রের।