ইউরোপ, আমেরিকার বাজারে অলিভ অয়েলের প্রতাপ কমাতে একজোট হল ভারত ও চিন। অস্ত্র, তুষ তেল। এই এশীয় জোটে হাত মিলিয়েছে তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জাপানও। বাংলাদেশ, পাকিস্তানও শীঘ্রই নাম লেখাতে পারে বলে খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
শিল্পমহলের দাবি, তুষ বা ধানের খোসা থেকে তৈরি তেলের রফতানি ছড়ানোর এই পরিকল্পনায় বিপুল লাভ দেখতে পারে পশ্চিমবঙ্গ। কারণ, এখানে বছরভর ধান হয়। এবং ধানের তুষ ও তা থেকে তেল উৎপাদনে এ রাজ্য ভারতে প্রথম।
বেশ কিছু এশীয় দেশ এ জন্য একটি বিশ্বমঞ্চ গড়েছে। নাম, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর রাইস ব্র্যান অয়েল। সম্প্রতি জাপানের টোকিওতে যাদের প্রথম সম্মেলনও হয়েছে। সেখানেই অলিভ অয়েলের একচেটিয়া বাজারে ভিত গাড়ার ছক কষে তারা। ঠিক হয়, তুষ তেল রফতানির ব্যবসা বাড়াতে নেওয়া হবে বিভিন্ন কৌশল।
ভারত, চিন, তাইল্যান্ড, জাপানের মতো ধান উৎপাদক দেশগুলিতে অঢেল তুষের জোগান থাকায়, তেল তৈরির সুযোগ বিপুল। তার উপর অন্য ভোজ্য তেলের তুলনায় ফ্যাটি অ্যাসিড কম থাকায় এবং ভিটামিন-ই ও অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। যে-কারণে ভারত-সহ এশীয় দেশগুলিতে তুষ তেলের চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে।
আর এই গুণই যে বাজার দখলে তুরুপের তাস হতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝছে শিল্পমহল। কারণ, ইউরোপ, আমেরিকায় পণ্য ব্যবহারে স্বাস্থ্যরক্ষার মাপকাঠিই প্রধান বিচার্য। তা ছাড়া, অলিভ তেলের থেকে এটি সস্তাও। তাই উন্নত দেশগুলিতে রান্না থেকে শুরু করে বেকারি পণ্য তৈরি-সহ প্রায় সব কিছুতে অলিভ অয়েল বেশি ব্যবহার হলেও এখনই তুষ তেল রফতানি থেকে ‘লাভ’-এর আঁচ পাচ্ছে এশীয় জোট।
তাদের সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অশোক সেঠিয়া বলেন, ‘‘বিদেশে তুষ তেল রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। ২০১৫-য় তা ওঠার পরেই রফতানি নিয়ে ভাবনা শুরু।’’ তিনি জানান, টোকিওর সম্মেলনে ভারতের ৪৫ জন গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনই পশ্চিমবঙ্গ থেকে।
ভোজ্য তেল শিল্পের এক কর্তার দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন তুষ তেলের উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে সারা বিশ্বেই এটি সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। সেই আগ্রহকে পুঁজি করে ব্যবসার ঘোড়া কত জোরে ছোটানো যায়, সেটাই শিল্পের চ্যালেঞ্জ।