যুদ্ধবিমান তৈরিতে রাফাল নির্মাতার সঙ্গে জোট রিলায়্যান্স এরোস্পেসের

রাফাল যুদ্ধবিমান বিক্রির চুক্তিতেই শর্ত ছিল। তা মেনে ভারতে লগ্নির কথা ঘোষণা করল ফরাসি বিমান নির্মাতা দাসল্ট অ্যাভিয়েশন। আর তা করতে গিয়ে অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শাখা রিলায়্যান্স এরোস্পেসের হাত ধরল তারা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাফাল যুদ্ধবিমান বিক্রির চুক্তিতেই শর্ত ছিল। তা মেনে ভারতে লগ্নির কথা ঘোষণা করল ফরাসি বিমান নির্মাতা দাসল্ট অ্যাভিয়েশন। আর তা করতে গিয়ে অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শাখা রিলায়্যান্স এরোস্পেসের হাত ধরল তারা।

Advertisement

সোমবার যৌথ বিবৃতিতে দুই সংস্থার দাবি, দাসল্ট-রিলায়্যান্স এরোস্পেস নামে এই যৌথ উদ্যোগ মেক ইন ইন্ডিয়া ও স্কিল ইন্ডিয়া প্রকল্পের সহায়ক। প্রযুক্তি হাতবদলের দৌলতে বিমান নির্মাণে তা এ দেশের সামনে খুলে দেবে নতুন আকাশও।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৫৯ হাজার কোটি টাকায় ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনতে ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি করে ভারত। শর্ত ছিল, ওই বিপুল বরাত ‘পুষিয়ে দিতে’ (অফসেট এগ্রিমেন্ট) চুক্তির অঙ্কের ৭৪% যন্ত্রাংশ ভারত থেকেই কিনতে হবে দাসল্টকে। ৫০% (প্রায় ৩০ হাজার কোটি) সরাসরি ঢালতে হবে এ দেশে। ৭ বছর ধরে। এই শর্তপূরণের অঙ্গ হিসেবেই দাসল্ট-রিলায়্যান্সের যৌথ উদ্যোগ।

Advertisement

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে টাটা, মহীন্দ্রা, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর মতো হালে আগ্রহী হয়েছে অনিলের রিলায়্যান্স এডিএ গোষ্ঠী। গত বছর জানুয়ারিতে এই ব্যবসায় পা রেখেছে তারা। এখনও পর্যন্ত বিমান বা তার যন্ত্রাংশ তৈরির অভিজ্ঞতা সংস্থাটির নেই। প্রতিরক্ষা ব্যবসায় ‘হাত পাকানো’ বলতে যুদ্ধজাহাজ নির্মাতা পিপাভব-কে কিনে নেওয়া। তাই অনেকে মনে করছেন, দাসল্টের সঙ্গে এই চুক্তি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা হিসেবে এক ঝটকায় বেশ খানিকটা এগিয়ে দিল তাদের।

অনিলের সংস্থার হাতে ৪০০ একরের এরোস্পেস পার্ক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সেখানে বিমানের যন্ত্রাংশ নির্মাণ কিংবা ভবিষ্যতে সেগুলি জুড়ে আস্ত যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকাঠামো গড়তে পারে তারা। দাসল্টের সঙ্গে চুক্তির দরুন বিমানের ইঞ্জিন, এরো-স্ট্রাকচার, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদির প্রযুক্তি হাতে আসবে। দক্ষতা সঞ্চয় হবে যুদ্ধবিমান তৈরির ‘সাপ্লাই চেন’ গড়ায়। ফলে দাসল্টের সঙ্গে চুক্তি আগামী দিনে অনিলের সংস্থার পায়ের তলার জমি শক্ত করতে পারে।

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সম্প্রতি বিদেশি লগ্নির পথ প্রশস্ত করেছে মোদী সরকার। এ দেশের বিপুল বাজারকে আজ অনেক দিনই পাখির চোখ করছে বোয়িং, এয়ারবাসের মতো বিমান এবং লকহিড মার্টিনের মতো যুদ্ধবিমান নির্মাতারা। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে আগ্রহী কেন্দ্র। একই সঙ্গে তাদের লক্ষ্য, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ভারতকে ওই বিষয়ে অনেক বেশি স্বনির্ভর করে তোলা। রাফালের বরাত দেওয়ার সময়ে তার অঙ্কের একটি অংশ ফিরতি লগ্নি কিংবা প্রযুক্তি ভাগাভাগির শর্ত রাখাও সেই কারণে।

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, দাসল্টকে যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য নাগপুরে কারখানা গড়তে পারে রিলায়্যান্স। এমনকী ভবিষ্যতে সরকারি বরাতের রাফাল-ও বেরোতে পারে সেই কারখানা থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন