আর্জি একশো দিনের কাজে বাগান সাফের

এই অবস্থায় চা বাগানের জঙ্গল সাফ করা বা ভিতরের রাস্তা মেরামতির মতো কাজকে সরকারি ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য রাজ্যের কাছে আর্জি জানাল দার্জিলিঙের চা শিল্প।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত ও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১০
Share:

পাহাড়ে ১০৪ দিনের টানা ধর্মঘটের জেরে বাগান বেহাল। চৌপাট ব্যবসা। এই অবস্থায় চা বাগানের জঙ্গল সাফ করা বা ভিতরের রাস্তা মেরামতির মতো কাজকে সরকারি ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য রাজ্যের কাছে আর্জি জানাল দার্জিলিঙের চা শিল্প।

Advertisement

পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত চা শিল্পমহল। ঘুরে দাঁড়াতে তারা সম্প্রতি কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়ের কাছেই আর্থিক ত্রাণ প্রকল্পের আর্জি জানিয়েছে। কারণ চা শিল্পের দাবি, এত দিন কাজ না-হওয়ায় বাগানের যা হাল, তাতে সেগুলিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে তাদের।

মঙ্গলবার রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা (ডিটিএ)। বাগানের সার্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি আগামী ১৪ অক্টোবর শিলিগুড়িতে প্রস্তাবিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। এর পর তাঁরা দেখা করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

Advertisement

ডিটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু পরে বলেন, ‘‘গাছগুলির উচ্চতা অস্বাভাবিক রকম বেড়েছে। আগাছা রয়েছে বাগানের সর্বত্র। রাস্তাও ভেঙে গিয়েছে। বাগান স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতেই মাস ছয়েক সময় লাগবে। খরচও বাড়বে। কিন্তু বাগানগুলির এখন আয় নেই। কর্মীদের বোনাস ও মজুরি দিতে খরচ হচ্ছে। তাই আমরা চাইছি গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পের (এনআরইজিএ) মতো কোনও সরকারি প্রকল্পের আওতায় ওই কাজগুলি হোক। সে কথাই মন্ত্রীদের জানিয়েছি।’’

প্রস্তাব পেয়ে পেয়ে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘শ্রমিকদের কথা ভেবেই সরকার চা শিল্পের পাশে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু আইনত ১০০ দিনের কাজ আদৌ বাগানে করা যাবে কি না, তা দফতরের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’

ওই দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, চা বাগানে ১০০ দিনের কাজ করা হয়। তবে তা মূলত রাস্তাঘাট তৈরি বা শ্রমিক কল্যাণে ওই ধরনের স্থায়ী সম্পদ তৈরির। যার মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কোথাও কোথাও জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজও হয়েছে। তবে ব্যক্তি মালিকানার এতগুলি বাগানে এত বড় মাপে ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজকে কী ভাবে সম্পদ সৃষ্টিকারী হিসেবে ধরা হবে, প্রশ্ন তা নিয়েই।

অবশ্য চা শিল্পের দাবি, এ ধরনের কাজের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থার বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বা মুনাফার যোগ নেই। তা ছাড়া তাঁরা চাষের জন্য কোনও সাহায্য চাইছেন না। ডিটিএ-র বক্তব্য, এমনিতেই আগামী বছরে উৎপাদন অনেকটাই মার খাবে। কারণ মাস ছয়েকের আগে বাগান স্বাভাবিক হবে না। ফলে মরসুমের গোড়ার দিকের উৎপাদন ধাক্কা খাবে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি আর্থিক বোঝা এই শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর পথে কাঁটা হতে পারে। তাঁদের আর্জি, এই কাজগুলি সরকারি প্রকল্পের আওতায় এলে বাগান পরিষ্কারের বাড়তি বোঝার ভার কমবে। ধর্মঘটের জেরে চা শিল্প যে-বিপুল ধাক্কা খেয়েছে, তা কিছুটা হলেও সামলানো যাবে।

তবে নিয়ম মেনে সরকারি সুবিধা আদৌ পাওয়া যাবে কি না, নজর এখন সেখানেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement