জুনে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) দেড় লক্ষেরও বেশি সদস্য পেনশন পাচ্ছেন না। মূলত ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা না-দেওয়াই তার কারণ। ওই শংসাপত্র জমার শেষ তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে। তবে পিএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা পেনশন পাচ্ছেন না, লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিলে তাঁদের দ্রুত তা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
রাজ্যে পিএফ দফতর থেকে প্রায় ৪.৩ লক্ষ জন পেনশন পান। পিএফের আঞ্চলিক কমিশনার (পেনশন) পরিতোষ কুমার জানান, ‘‘পেনশনভোগীদের থেকে এ পর্যন্ত ২.২৪ লক্ষের মতো ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট পেয়েছি। বেশ কিছু সদস্য শারীরিক সমস্যার কারণে সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেননি। তাঁদের থেকে পুরনো পদ্ধতিতেই তা নিয়েছি। ফলে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট না-দিতে পারায় জুনে পেনশন পাচ্ছেন না প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার জন।’’
গত বছর পর্যন্ত পুরনো পদ্ধতিতেই লাইফ সার্টিফিকেট জমার ব্যবস্থা চালু ছিল। তখনও অবশ্য নানা কারণে তা জমা দিতে না-পারায় হাজার দশেক জনের পেনশন আটকেছিল। কিন্তু এ বার সেই সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে।
আরও পড়ুন:চিনের কাছে দ্রুততম বৃদ্ধির দেশের তকমা খুইয়েছে ভারত!
পেনশন প্রাপক জীবিত আছেন কি না, তা জানতে প্রতি বছর তাঁদের লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। যে ব্যাঙ্ক থেকে পেনশন তোলেন সার্টিফিকেট সাধারণত সেখানেই দেন তাঁরা। সাধারণত নভেম্বরের মধ্যে তা ব্যাঙ্কে দেওয়াই নিয়ম। এত দিন ব্যাঙ্কে গিয়ে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করেই লাইফ সার্টিফিকেট দিতে হত।
এ বছর থেকে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র। তা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩১ মার্চ। পিএফ কর্তৃপক্ষ জানান, এপ্রিল পর্যন্ত যাঁরা সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন, তাঁদের পেনশন আটকায়নি।
কেন্দ্র ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমার ফরমান জারি করলেও বৈদ্যুতিন ব্যবস্থায় তা বাস্তবায়িত করার পরিকাঠামোগত অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে পেনশনভোগীদের। যেমন, অনেকে জানতেনই না কোথায় তা জমা দিতে হবে। অনেক ব্যাঙ্কেই প্রথমে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট করানোর ব্যবস্থা ছিল না। কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট করানোর জন্য রাজ্যে প্রায় ৮ হাজার কমন সার্ভিস সেন্টার খোলা হয়েছে। কিন্তু ইপিএফ পেনশনভোগীদের মধ্যে অনেকেই তার হদিস পেতেই হয়রান হয়েছেন। বিশেষত সমস্যায় পড়েছেন যাঁদের বয়স বেশি তাঁরা।
পিএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা পেনশন পাননি, তাঁরা এখন ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিলে তাঁদের পেনশন দিয়ে দেওয়া হবে। এখন কেউ তা জমা দিতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক, কমন সার্ভিস সেন্টার অথবা কলকাতায় পিএফের সদর এবং আঞ্চলিক দফতরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যন্ত্রের সাহায্যে বাড়িতে বসেও ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া যায়। তবে তার জন্য পেনশন প্রাপককে ওই যন্ত্রটি নিজের পয়সায় কিনতে হবে।