দু’পক্ষের যুদ্ধং দেহি মেজাজে পারদ আরও চড়ার আশঙ্কা।
যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেয় না, তাদের আখেরে ফল ভুগতে হয় বলে শুক্রবারই সাবধান করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য। তার চব্বিশ ঘণ্টা না পেরোতেই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি মনে করিয়ে দিলেন নিয়ন্ত্রকের নমণীয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা। দু’দিনে কেউ কারও নাম করেননি। কিন্তু দু’তরফের কথার এই তাল ঠোকাঠুকিতে কেন্দ্র বনাম শীর্ষ ব্যাঙ্কের ‘লড়াই’ আরও তেতো হওয়ার সিঁদুরে মেঘ দেখছে ব্যাঙ্কিং শিল্প। একই আশঙ্কা করছেন অনেক আমলা। দু’পক্ষের যুদ্ধং দেহি মেজাজে জল পড়া দূরস্থান, এর পারদ আরও চড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
অনুৎপাদক সম্পদে রাশ টানতে ধার দেওয়া নিয়ে ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উপর বিধিনিষেধ থেকে শুরু করে নেট লেনদেনে নজরদারির জন্য আলাদা নিয়ন্ত্রক— হালে নানা বিষয়ে কেন্দ্র ও শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভিন্নমত সামনে এসেছে। কার্ড, অ্যাপ ইত্যাদি মারফত লেনদেনে নজরদারির জন্য পৃথক নিয়ন্ত্রকের পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ নাকচ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বিষয়টি নিজেদের এক্তিয়ারে রাখার পক্ষপাতী তারা।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে ওই প্রস্তাব স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সামিল। হয়তো সেই কারণেই তা নিয়ে অত কড়া বার্তা দিয়েছেন আচার্য। আবার তেমনই অর্থ মন্ত্রক মনে করে, দ্রুত বদলাতে থাকা পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিয়ন্ত্রকেরও নমনীয় হওয়া জরুরি। তারই প্রতিফলন জেটলির কথায়।
আরও পড়ুন: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নরের বিরল-তোপে কেন্দ্র
অধিকাংশ ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞই মনে করেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা জরুরি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক প্রাক্তন কর্তার কথায়, আমেরিকা ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। সরকার হস্তক্ষেপ করে না। কিন্তু ভারতে এ নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। পরোক্ষ ভাবে অনেক ক্ষেত্রেই কেন্দ্রের প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করতে হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে। অবশ্য আর এক প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্তার মতে, তর্কে না গিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্ক এবং কেন্দ্রের উচিত সমাধানের খোঁজে আলোচনায় বসা।