অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দ্রুত ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণার ইঙ্গিত বৃহস্পতিবারই দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার মুম্বইয়ে তিনি ফের জানালেন, অর্থনীতির বসে যাওয়া চাকাকে টেনে তুলতে প্রথমে বেসরকারি লগ্নি বাড়ানো এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের সমস্যা মেটানোকেই পাখির চোখ করছেন তাঁরা।
একই সঙ্গে জেটলির দাবি, জিএসটি-র শুরুটা হয়েছে যথেষ্ট মসৃণ ভাবে। জুলাইয়ে তাতে আদায় হওয়া ৯৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৬৫ হাজার কোটিই কর ফেরতে চলে যাবে বলে যে আশঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে, তা-ও ঠিক নয় বলে অর্থ মন্ত্রকের দাবি। তাদের মতে, আসলে ওই অঙ্ক ১২ হাজার কোটি। সেই সঙ্গে নর্থব্লকের আশ্বাস, খুব শীঘ্রই আটকে থাকা ফেরতযোগ্য করের ৬০০ কোটি টাকা হাতে পাবেন রফতানিকারীরা।
অনেকেই বলছিলেন, নোটবন্দির রেশ কাটতে-না-কাটতেই তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর জন্য জোর ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। বৃদ্ধি নেমেছে ৫.৭ শতাংশে। সেই অভিযোগের মুখে জেটলির সাফাই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত যেখানে তিনি এ দিন ফের দাবি করেছেন যে, করের জাল আরও ছড়ানো এবং নগদ লেনদেনে ধাক্কাই ছিল নোট বাতিলের প্রধান উদ্দেশ্য।
এই মুহূর্তে ক্রেতা চাহিদায় ভাটার কারণে লগ্নি হচ্ছে কম। ফলে শিল্প ঋণের চাহিদা তলানিতে। যে সমস্ত সংস্থা আগে ধার নিয়েছে, তারাও অনেকে শোধ করতে খাবি খাচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উপরে চেপেছে অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝা। এই অবস্থায় তাদের আরও বেশি শেয়ার মূলধন জোগানোর ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। জেটলিও কাল বলেন, ব্যাঙ্ক-কে পুঁজি জোগানোর প্রস্তাব টেবিলে রয়েছে। এ দিন ফের বৃদ্ধির ইঞ্জিনে গতি বাড়াতে ব্যাঙ্ক-কে যোগ্য সঙ্গতের উপযুক্ত করার কথা বলেন তিনি। তোলেন আরও বড় ও পোক্ত ব্যাঙ্ক গড়তে সংযুক্তিকরণের প্রসঙ্গ। তাঁর দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি প্রতিকূল হওয়া সত্ত্বেও দেশে তাকে ধসে যেতে দেয়নি কেন্দ্র।
মূলত অর্থনীতির হাল ফেরানো আর কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিতেই ‘দিল্লি দখল’ করেন নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র কথা প্রচারও হয়েছে। কিন্তু টাকা ঢালতে সে ভাবে এগিয়ে আসেননি দেশের বেসরকারি লগ্নিকারীরা। অর্থনীতির হাল ফেরাতে এখন সেই পুঁজি টানাকে পাখির চোখ করছে কেন্দ্র।
ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার আর্জি জানিয়েছে সিআইআই। তাতে রয়েছে ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাই, আপাতত রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা শিথিলের প্রস্তাব।