চাইলেই পুঁজি নয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে: কেন্দ্র

বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার প্রথম সারির কর্তাদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার লক্ষ্যে রবিবার আয়োজিত ‘পিএসবি মন্থন’-এ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বলেন, ‘‘গোটা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে যখন অর্থ জোগানো হচ্ছে, তখন আমরাও চাইব, বৃদ্ধির চাকাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় আরও অবদান রাখুক তারা।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুরুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫১
Share:

সওয়াল: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সভায় জেটলি। গুরুগ্রামে। ছবি: পিটিআই।

কেন্দ্রের ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার মূলধন জোগানোর প্রকল্পে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহজে খুশি মতো অর্থ পাবে না। ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচিব রাজীব কুমার আজ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন, দ্রুত আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটার শর্তেই তাদের পুঁজি জোগানো হবে।

Advertisement

বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার প্রথম সারির কর্তাদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার লক্ষ্যে রবিবার আয়োজিত ‘পিএসবি মন্থন’-এ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও বলেন, ‘‘গোটা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে যখন অর্থ জোগানো হচ্ছে, তখন আমরাও চাইব, বৃদ্ধির চাকাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় আরও অবদান রাখুক তারা।’’ অবশ্য তাঁর দাবি, মূলধন দেওয়া হচ্ছে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাণিজ্যিক লেনদেনে হস্তক্ষেপ করবে না কেন্দ্র। তবে বন্ড মারফত এবং শেয়ার মূলধন বাড়িয়ে পুঁজি জোগানোর অর্থ ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য ফেরাতে কার্যত তহবিল দিচ্ছে দেশ।

উল্লেখ্য, এ দিনই প্রথম দফার ‘পিএসবি মন্থন’ অনুষ্ঠিত হল। জেটলি বৈঠকে আশা প্রকাশ করেন যে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি চাঙ্গা হলে তারা ছোট ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বাড়াবে। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নির পথ করে বৃদ্ধি ও কাজের সুযোগ বাড়ানোর অন্যতম চালিকাশক্তি হবে তারা।

Advertisement

অনুৎপাদক সম্পদে জেরবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মূলধন জোগানোর প্রকল্প ঘোষণার সময়েই রাজীব কুমার বলেছিলেন, কাজের সাফল্যের নিরিখেই মূলধন বণ্টন হবে। কোন ব্যাঙ্ক কী ধরনের কাজ করে, তারা ভবিষ্যতে কী ভাবে এগোতে চায়, সবই দেখা হবে। এ দিনও একই সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেউ যেন না-মনে করে, সহজে অর্থ হাতে পাওয়ার পথ খুলে দেবে এই প্রকল্প। প্রতিটি ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। আর্থিক ভিত আরও মজবুত করার ব্যবস্থাও পর্ষদকে নিতে হবে।’’

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে অক্সিজেন জোগাতে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার মূলধন ঢালার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র জানিয়েছিল, ১.৩৫ লক্ষ কোটিই আসবে বন্ড ছেড়ে। ব্যাঙ্ক ওই বন্ড কিনে নেবে। তবে সমপরিমাণ অর্থ কেন্দ্র লগ্নি করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শেয়ার মূলধনে। কুমার জানান, কোথায় কতটা বন্ড জোগানো হবে, তা ঠিক করার ভার থাকবে অর্থ মন্ত্রকের উপর। বাকি ১৮ হাজার কোটি টাকা আসবে ‘ইন্দ্রধনুষ’ প্রকল্পের আওতায়।

এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, শুধু জলের মতো টাকা ঢেলে লাভ হবে না। বরং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাঙ্কিংয়ের সমস্যা মেটাতে হাঁটতে হবে সংস্কারের পথে। নিশ্চিত করতে হবে ঋণ খেলাপ যাতে আর মাত্রাছাড়া না হয়, সেই বিষয়টিও। বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য ফেরাতে পরিচালন ব্যবস্থার সংস্কার না-হলে এই মূলধন থেকে ফের অলাভজনক প্রকল্পেই ঋণ দেওয়া হতে পারে। যার জেরে ফের হয়তো মাথাচাড়া দেবে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা। পেশাদারিত্ব আনতে তাই শীর্ষকর্তাদের বাড়তি ক্ষমতা দিতে বলেছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও এ দিন একই যুক্তি দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন