Market Price

বৃদ্ধির হার ‘রহস্যজনক’, মত প্রাক্তন উপদেষ্টার

বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থার সমীক্ষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছিল, গত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৫% থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশের পরে দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে জিডিপি বেড়েছে ৮.৪% হারে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

চলতি অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৮.৪%। যা প্রায় সমস্ত মূল্যায়ন সংস্থার পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে। অবাক করেছে অর্থনীতিবিদদের একাংশকে। আজ কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের বক্তব্য, এই হার ‘রহস্যজনক’। ‘হৃদয়ঙ্গম’ করাও কঠিন!

Advertisement

বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থার সমীক্ষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছিল, গত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৫% থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশের পরে দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে জিডিপি বেড়েছে ৮.৪% হারে। যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুধু তা-ই নয়, আগের দুই ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির হারেও বড় সংশোধন আনে সরকার। এপ্রিল-জুনে তা ৭.৮% থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৮.২%। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৭.৬% থেকে বেড়ে হয় ৮.১%। গোটা অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাসও বাড়িয়ে ৭.৬% করা হয়। আজ এক অনুষ্ঠানে সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘আমি সৎ ভাবেই আপনাদের বলতে চাই, সর্বশেষ জিডিপির হিসাব আমি বুঝতে পারিনি। প্রকৃত শ্রদ্ধা বজায় রেখেই এ কথা বলছি। ওই পরিসংখ্যান রহস্যজনক। হিসাবেই আনা যাচ্ছে না। এর অর্থ আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’’

গত ত্রৈমাসিকের জিডিপির পরিসংখ্যান নিয়ে অবশ্য অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। দেশের প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, দেশের বাজারের চাহিদার পরিস্থিতির সঙ্গে জিডিপির একটা সামঞ্জস্য থাকে। এ ক্ষেত্রে দুই পরিসংখ্যানের অনেক ফারাক রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের ব্যাখ্যা, এ বার অনিয়মিত বর্ষার ফলে কৃষি ক্ষেত্রের অগ্রগতি মসৃণ ছিল না। খাদ্যপণ্যের দামের ছেঁকায় হাত পুড়েছে সাধারণ মানুষের। ফলে অত্যাবশ্যক পণ্য বাদে অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির হারও মন্থর, ৩ শতাংশের আশপাশে। সন্তোষজনক নয় শিল্পোৎপাদনের হারও। সরকারের যুক্তি, মূলত পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারের বিপুল খরচের কাঁধে ভর করে অর্থনীতির গতি বাড়ছে। বেকারত্ব কমেছে, বেড়েছে আর্থিক কর্মকাণ্ড।

Advertisement

সুব্রহ্মণ্যন অবশ্য বলেছেন, ‘‘এই পরিসংখ্যানের মধ্যে অনেক কিছুই রয়েছে। তবে আমার তা বোধগম্য হয়নি। আমি বলছি না এই হিসাব ভুল। সেটা অন্যেরা বলবেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, সরকার বারবার বলছে বিনিয়োগের জন্য ভারত এখন আদর্শ জায়গা। কিন্তু বাস্তব হল, গত কয়েক বছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি, বেসরকারি লগ্নি এবং কর্পোরেট লগ্নি কমেছে।

আজ প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার স্পষ্ট মন্তব্য, এ দেশের মানুষের মধ্যে একটা ধারণা রয়েছে যে, ভারত খুব বড় বাজার। এই ধারণা থেকে তাঁদের বার হয়ে আসতে হবে। ভারতের অর্থনীতির বহর ৩ লক্ষ কোটি ডলারের বেশি। কিন্তু এর মধ্যে মধ্যবিত্তের বাজার মাত্র ৭৫,০০০ কোটি ডলার। গোটা বিশ্বের তা ২০-৩০ লক্ষ কোটি। সুব্রহ্মণ্যনের কথায়, ‘‘আমরা অনেকে ভাবি দেশের বাজারের চাহিদাই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু এই ধারণা বিপদ ডেকে আনতে পারে।’’ একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক পরামর্শদাতা পরিষদের সদস্য শমীকা রবি স্বীকার করেন যে, বেসরকারি লগ্নি বিপুল ধাক্কা খেয়েছে। তবে তা দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের নীতির দীর্ঘমেয়াদি ফল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন