ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে পরিকাঠামোয় লগ্নির তহবিল জোগাতে ৩০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করল এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)।
রাজ্যে বেসরকারি লগ্নির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও নির্দিষ্ট প্রকল্প তৈরি এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ গড়ার জন্য ৩০ কোটি ডলার বা ১,৯৫০ কোটি টাকার এই এডিবি ঋণের অর্থ ব্যয় হবে। ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের রেজিস্ট্রেশন-লাইসেন্স প্রক্রিয়া সরল করার কাজও হবে এই অর্থে।
মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম সরকারের চাপিয়ে যাওয়া ঋণের বোঝা নিয়ে সরব। তাঁর যুক্তি, ঋণ শোধ করতে গিয়ে পরিকাঠামো ও সামাজিক খাতে খরচের অর্থই থাকছে না রাজ্যের হাতে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতার জমানায় এডিবি প্রথম ২০১২-তে রাজ্যকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেয়। অন্য ঋণের সঙ্গে এর পার্থক্য হল, এটি পেতে হলে সরকারকে কিছু শর্ত মেনে তৈরি করতে হয় আর্থিক নীতি। যেমন, রাজ্যকে পরিকাঠামো বা স্থায়ী সম্পদ তৈরির জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে, কমাতে হবে রাজকোষ ঘাটতি, সরকারি ব্যবস্থায় আর্থিক শৃঙ্খলা এনে পরিকাঠামো ও সামাজিক ক্ষেত্রে খরচ বাড়াতে হবে।
প্রথম দফার কাজ
ই-প্রশাসনের মাধ্যমে কর ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করা
বৃহস্পতিবার এডিবি জানিয়েছে, রাজ্য সব রকম শর্তই পূরণ করেছে। সরকার যে আর্থিক শৃঙ্খলার পথে ফিরতে দায়বদ্ধ, তা প্রমাণ করেছে। বৈদ্যুতিন কর আদায় ব্যবস্থা (ই-
প্রশাসন) চালু করে রাজ্য পুরস্কারও কুড়িয়েছে। রাজ্যের জিডিপি-র নিরিখে সরকারি ব্যয় ২০১১-’১২-তে ছিল মাত্র ০.৫%। তা ২০১৫-’১৬-তে বেড়ে হয়েছে ১.৩%। ওই সময়ে রাজকোষ ঘাটতিও রাজ্য জিডিপি-র ৩.৪% থেকে নেমেছে ২.২ শতাংশে।
এডিবি এ বার নিশ্চিত করতে চায়, সরকারি খরচের আরও বেশি অর্থ সেতু, সড়ক, জল বা বিদ্যুৎ সরবরাহ, নিকাশির মতো আর্থ-সামাজিক পরি
-কাঠামো তৈরিতে ব্যয় করুক রাজ্য, যাতে লগ্নির পথ তৈরি হয়। সে জন্যই
দ্বিতীয় দফার ঋণ।
এডিবি চায়, ২০২১-’২২-এর মধ্যে রাজ্যের জিডিপি-র ২.২% পরিকাঠামোয় ব্যয় হোক। এডিবি-র অর্থনীতিবিদ নবেন্দু করণের যুক্তি, ‘‘প্রথম দফার ঋণ কাজে লাগিয়ে আর্থিক সংস্কার সম্ভব হয়েছে, যাতে রাজকোষে ভারসাম্য আসে। তবে তার ফল পুরো পেতে পাঁচ বছর লাগবে। পাশাপাশি এই সব সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাওয়াও জরুরি।’’