জন-ধন প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক (বেসিক) সেভিংস অ্যাকাউন্টে দেওয়া ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় কর ১৮% থেকে নেমে আসছে শূন্যতে। শনিবার অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণায় গ্রাহকেরা খুশি। বেশ কিছু পণ্যে কর ছাঁটাই আশ্বস্ত করেছে শিল্পকেও। তেমনই সিমেন্টে জিএসটি ২৮ শতাংশই থেকে যাওয়া নিয়ে আবার আক্ষেপ আছে। সব মিলিয়ে প্রতিক্রিয়া মিশ্র।
যে সব অ্যাকাউন্টে শুধু টাকা তোলা ও জমার সুবিধা পাওয়া যায়, ন্যূনতম টাকা রাখার বাধ্যবাধকতা নেই, সেগুলি বেসিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট। চেক বুক থেকে শুরু করে অনেক সুবিধাই এখানে মেলে না। জন-ধন প্রকল্পের অধীনে যে সব প্রাথমিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাতে পরিষেবা পেতে গ্রাহকদের আর জিএসটি গুনতে হবে না। ব্যাঙ্কিং শিল্পের মতে, ওই ধরনের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন দরিদ্র মানুষ। এতে লাভ হবে তাঁদের। পণ্যবাহী যানে তৃতীয় পক্ষ (থার্ড পার্টি) মোটর বিমায় জিএসটি কমানোর কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ক্ষুব্ধ ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের ব্যাঙ্কিং কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা ব্যাঙ্কে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলেন। কিন্তু ওই অ্যাকাউন্টে পরিষেবা পাওয়ায় খরচ কমাতে পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ ক্যালকাটা চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান এমেরিটাস ফিরোজ আলিরও অভিযোগ, ‘‘জিএসটি চালুর পরে বহু পণ্যে কর বেড়েছে। আটকে থাকছে মূলধন। কিন্তু আমরা সুবিধা পেলাম না।’’
নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতিতে প্রত্যাশার পারদ চড়াই ছিল। শনিবারের ঘোষণায় বড় শিল্প মোটের উপরে খুশিও। তবে সিমেন্টের মতো কিছু পণ্যে কর না কমায় হতাশা চেপে রাখেনি তাদের একাংশ। যেমন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খণ্ডেলওয়ালের আক্ষেপ, ‘‘সিমেন্টের দাম কমলে নির্মাণ খরচ কমত।’’ সিমেন্ট শিল্পের প্রেসিডেন্ট মহেন্দ্র সিংঘি অবশ্য আপাতত ভরসা রাখছেন অর্থমন্ত্রীর আগামী দিনে কর হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনার ইঙ্গিতে।
সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর বদল দেখে বোঝা যাচ্ছে পরিষদ আগামী দিনে ২-৩টি কর কাঠামোর দিকে এগোতে চায়।’’
অনেক ছোট-মাঝারি সংস্থা জুতো তৈরি করে। ওই শিল্পের সংগঠন ফ্যাকসির প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহর মতে, জুতোয় জিএসটি কমায় উপকৃত হবে তারা। বর্ষশেষের মুখে টিভি, ডিজিটাল ক্যামেরার মতো ভোগ্যপণ্যে কর কমায় ব্যবসা বৃদ্ধির আশা করছেন দ্য কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েন্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কমল নন্দী ও প্যানাসনিকের প্রেসিডেন্ট মণীশ শর্মা। যদিও এয়ার কন্ডিশনারে কর না কমায় তাঁরা কিছুটা হতাশ।