৪জির দাবিতে পথে কর্মীরাই

যদিও সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, সংস্থার হাতে যদি এই ৪জি জমানায় বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া অস্ত্রই না থাকে, তবে আগামী দিনে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। আর সেটা হলে চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন কর্মী-অফিসাররা।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

যে সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ উঠত পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ পেয়েও দ্রুত নড়ে না বসার, তাঁরাই এ বার সংস্থার স্বার্থে রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উন্নত প্রযুক্তির ৪জি প্রযুক্তি চালুর দাবিতে।

Advertisement

যদিও সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, সংস্থার হাতে যদি এই ৪জি জমানায় বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া অস্ত্রই না থাকে, তবে আগামী দিনে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। আর সেটা হলে চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন কর্মী-অফিসাররা। সেটা বুঝেই এই সিদ্ধান্ত। কারণ, এখনও পর্যন্ত ৩জির উপরে উঠতে পারেনি বিএসএনএল। সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রাহকদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন খোদ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির সিএমডি। বার কয়েক আশ্বাস দিলেও, সেই পরিষেবার জন্য স্পেকট্রাম বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। ফলে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে এ বার কর্মীরা জুড়ে দিয়েছেন ৪জি চালুর শর্ত। টেলি শিল্পে প্রতিযোগিতার দৌড়ে সংস্থাকে টিকিয়ে রাখতে স্পেকট্রামের দাবিতেও পথে নামছেন সংস্থাটির কর্মী-অফিসারেরা।

বিএসএনএলের পরিষেবা ও তার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অনেকে। পরিস্থিতি আঁচ করে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ছুটির দিনেও কিছু পরিষেবা কেন্দ্র খোলা রাখছে সংস্থা। দফতরে বসে কাজের বদলে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্মীদের গ্রাহকের দরজায় পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকার বাধ্যবাধকতায় সে সব মানছে ইউনিয়নগুলি। এ বার সেই বাধ্যবাধকতা বুঝে বেতন সংশোধন-সহ বিভিন্ন দাবির সঙ্গে অবিলম্বে স্পেকট্রাম পাওয়াকেও জুড়ে দেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমেছে অল ইউনিয়ন্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন্স অব বিএসএনএল (এইউএবি)।

Advertisement

রাজ্যে তাদের আহ্বায়ক অনিমেষ মিত্র জানান, দফতরের বিভিন্ন শাখায় একদফা ধর্না কর্মসূচির পরে ১৪ নভেম্বর সর্বত্র পদযাত্রা করবেন তাঁরা। রিলায়্যান্স জিয়ো বাজারে আসার পরে ৪জি নিয়ে টেলি সংস্থাগুলির মধ্যে লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। কথা বলার মাসুলের থেকেও মোবাইলের চাহিদা বাড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে নেট পরিষেবার মান। কিন্তু সেই নিরিখে পিছিয়ে গিয়েছে বিএসএনএল। গত বছর স্পেকট্রাম চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছিলেন সংস্থার সিএমডি অনুপম শ্রীবাস্তব। কিন্তু টেলিকমমন্ত্রী মনোজ সিংহ বার বার তা বরাদ্দের আশ্বাস দিলেও, এখনও মেলেনি।

সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য প্রশ্ন, সংস্থার স্বার্থের প্রশ্ন জড়িত যে বিষয়টির সঙ্গে, তা নিয়ে জোরদার দাবি জানাতে এত দেরি হল কেন?

তবে দেরির কথা মানতে নারাজ অনিমেষবাবু। তাঁর মতে, তাঁদের সংসদ অভিযানের পরেই গত ফেব্রুয়ারিতে স্পেকট্রাম বণ্টনের আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তার পরে বিএসএনএল ও কেন্দ্রের মধ্যে আলোচনায় নজর রেখেছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু এখনও সেই আশ্বাস মেলেনি বলেই পথে নামতে বাধ্য হচ্ছি।’’

৪জির অভাবে প্রতিযোগিতায় বিএসএনএলের পিছিয়ে পড়ার দায় কেন্দ্রের উপরই চাপিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশে মোবাইল পরিষেবা শুরুর পরে প্রায় সাত বছর বিএসএনএলকে সেই ব্যবসায় পা রাখতে দেওয়া হয়নি। এখন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে টক্কর নিতে বলা হলেও, তার অস্ত্র দেওয়া হচ্ছে না হাতে। বরং সংস্থাকে আর্থিক ভাবে দুর্বল করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন