Budget 2021

কাজ জোগাতে ভরসা পরিকাঠামোয় লগ্নিই

করোনা-বিধ্বস্ত অর্থনীতির বাস্তব মাথায় রেখে সোমবার বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লকডাউনের জেরে শুধু জিডিপি সঙ্কুচিত হয়নি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৭:৪২
Share:

নির্মলা সীতারামন।

কোভিড আর লকডাউনের ধাক্কায় ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরানোর পাশাপাশি কাজের সুযোগ তৈরিকেই বাজেটে পাখির চোখ করছে কেন্দ্র। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, তা করার চেষ্টা হবে মূলত পরিকাঠামোয় টাকা ঢেলে। আর তার জন্য প্রয়োজনে মোটা ঋণ করতেও পিছপা হবে না সরকার।

Advertisement

করোনা-বিধ্বস্ত অর্থনীতির বাস্তব মাথায় রেখে সোমবার বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লকডাউনের জেরে শুধু জিডিপি সঙ্কুচিত হয়নি। রুজিরুটি হারিয়েছেন অনেকে। শহরে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফেরা মানুষের ‘ভরসা’ শেষে একশো দিনের কাজ। লকডাউন ওঠার পরেও প্রথমে অনেকে নতুন ভাবে কাজ খুঁজতে শুরু করেননি। কিন্তু যেই তাঁরা সেই পথে হাঁটতে শুরু করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে বেকারত্বের হার।

মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘লকডাউন ওঠার পরে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক দ্রুত ছন্দে ফিরছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। এই অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) সরকারি খরচ বিশেষ হয়নি। কিন্তু তারপরে তা হতেই অর্থনীতির গতি বেড়েছে। কিন্তু তেমনই তা দেখে নতুন করে কাজ খোঁজা শুরু করেছেন বহু মানুষ। ফলে জুনে লকডাউন ওঠার পরে বেকারত্বের হার কমতে শুরু করলেও, এখন তা ফের ঊর্ধ্বমুখী।’’ আর এই কারণেই বাজেটে কাজের সুযোগ তৈরির চেষ্টা হবে বলে তাঁর দাবি।

Advertisement

উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র হিসেব অনুযায়ী, ডিসেম্বরে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৯.১%। ছ’মাসে সর্বোচ্চ। অথচ এমনকি নভেম্বরেও তা ছিল ৬.৫%। সংস্থাটির ব্যাখ্যা, কাজের খোঁজে থাকা মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ বেড়েছে। কিন্তু এখনই এত জন ‘বাড়তি’ লোককে কাজ দেওয়ার মতো অবস্থায় অর্থনীতি নেই। মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, গ্রামে একশো দিনের কাজের চাহিদা থেকেও শহরে কাজের আকাল স্পষ্ট।

কিন্তু কী ভাবে বাজেটে চাকরির সুযোগ তৈরির চেষ্টা হবে?

মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, পরিকাঠামোয় বরাদ্দ বৃদ্ধিই একমাত্র রাস্তা। আবাসন, নগরোন্নয়ন, সড়ক পরিবহণ, জাহাজ মন্ত্রকের মতো পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রকে ১৫-২৫ শতাংশ বরাদ্দ বাড়তে পারে। মোদী জমানায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, স্মার্ট সিটি, অম্রুতের মতো প্রকল্পগুলির মেয়াদ শেষের দিকে। শেষবেলায় লক্ষ্যপূরণের জন্য যত বেশি সম্ভব অর্থ ঢালা হবে। দ্বিতীয় দফায় ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ চালু করে শৌচাগারের পাশাপাশি অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণেও সম্ভবত জোর দেওয়া হবে। আমলাদের ব্যাখ্যা, লকডাউনে অসংগঠিত ক্ষেত্রের এবং কম-আয়ের কর্মী-শ্রমিকরাই বেশি মার খেয়েছেন। বহু ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প সংস্থা বন্ধ হওয়ার জেরে কাজ হারিয়েছেন অনেকে। বাজেটে সে দিকেই নজর থাকবে। যেমন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) দৌলতে গ্রামে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা।

কিন্তু প্রশ্ন হল, টাকা আসবে কোথা থেকে? রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা কত দূর শিথিল করবেন নির্মলা?

নর্থ ব্লক সূত্রের জবাব, ‘‘সরকারের ঘরে টাকা বাড়ন্ত। ফলে ঋণ করেই পরিকাঠামোয় টাকা ঢালতে হবে। ওই ক্ষেত্রের প্রকল্পগুলিকে অর্থ জোগাতে নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান তৈরির ঘোষণাও করা হতে পারে বাজেটে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন