কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে হওয়া আঞ্চলিক বাণিজ্য চলে মূলত স্থানীয় মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে। ছবি: এএফপি।
ভারত-পাক সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা জারি থাকার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ফের শুরু হল বিনিময় বাণিজ্য। সীমান্তের কাছের শহর উরিতে গোলাগুলি চলার কারণে যা সম্প্রতি কার্যত বন্ধ ছিল।
কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে হওয়া এই আঞ্চলিক বাণিজ্য চলে মূলত স্থানীয় মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে। তাতে দু’দেশের মুদ্রার লেনদেনও হয় না। চলে পুরোপুরি পণ্য বিনিময়ের পদ্ধতিতে। কাশ্মীরের স্থানীয় কর্তা রিয়াজ আহমেদ মালিকের কথায়, মঙ্গলবার ভারত থেকে পাকিস্তানের চাকোঠির দিকে রওনা দেয় ৩৫টি ট্রাক। প্রায় একই সংখ্যক ট্রাক পাকিস্তান থেকেও আসে।
কাশ্মীরি ব্যবসায়ীদের মতে, এমনিতেই যে কোনও বাণিজ্যে দু’তরফের পারস্পরিক বিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার উপরে এ ধরনের বিনিময় বাণিজ্যে তা আরও জরুরি। বিশেষত যেখানে মূলত হোয়াটসঅ্যাপে ঠিক হওয়া দর এবং আসার পরে পণ্যের গুণমান পরখে আস্থা রেখেও ব্যবসা করেন দু’দেশের ব্যবসায়ীরা। তাই দু’দেশের এমন রণং দেহি অবস্থানের মধ্যেও এই বাণিজ্য চালু হওয়াকে অন্তত সামান্য আশার আলো হিসেবে দেখছেন স্থানীয় মানুষ।
সাধারণত এই বিনিময় বাণিজ্যে কাপড়, জিরে, লঙ্কা, গোলমরিচ, এলাচ, কলা, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি রফতানি করেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তার বদলে পাকিস্তানের দিক থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে আসে কার্পেট, কাপড়, কমলালেবু, আম ইত্যাদি। এই বাণিজ্য বন্ধ থাকলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষই।
সম্প্রতি দুবাইয়ে দক্ষিণ এশীয় বাণিজ্য সম্পর্কে আয়োজিত সভায় বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। দু’তরফের মধ্যে আর্থিক ও বাণিজ্যিক নির্ভরশীলতা যত বাড়ে, তত কমে সংঘাতের সম্ভাবনা। অনেকের মতে, সেই যুক্তিতেই ভারত-পাকিস্তানের বিনিময় বাণিজ্য বহাল থাকা জরুরি। দু’দেশের পাহাড়প্রমাণ সমস্যার সামনে তা সে যতই অকিঞ্চিৎকর হোক না কেন। তবে পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারী কামানে গোলা বর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ভারত এ দিন যে ভাবে সুর চড়িয়েছে, তাতে ফের এই বিনিময় বাণিজ্য থমকে যাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দিহান অনেকে।