মূলধন জোগানো হবে এমন ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আর্থিক হাল খতিয়ে দেখতে ব্যালান্স শিট-সহ বিভিন্ন নথি চেয়ে পাঠাল এসবিআই ক্যাপিটাল। নথিগুলি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ওই সব ব্যাঙ্কের মধ্যে সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষর করার জন্য খসড়া তৈরি করবে এসবিআই ক্যাপিটাল। এই চুক্তির ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় সরকার আর্থিক দিক থেকে তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়া ওই ১০টি ব্যাঙ্ককে মোট ৮৫৮৬ কোটি টাকার মূলধন দেবে। আগামী ২৫ মার্চের মধ্যেই মউয়ের খসড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেবে এসবিআই ক্যাপিটাল।
বুধবার ইউকো ব্যাঙ্কের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর ভি এস আইয়ার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এসবিআই ক্যাপিটাল ব্যালান্স শিট ছাড়াও ব্যাঙ্কের আর্থিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে আরও কিছু নথি চেয়ে পাঠিয়েছে। সেগুলি পাঠিয়েও দিয়েছি। আগামী ২৫ মার্চের মধ্যেই মউয়ের খসড়া আমাদের কাছে এসবিআই ক্যাপিটালের দেওয়ার কথা।’’
ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, যে-সব তথ্য এবং নথি এসবিআই ক্যাপিটাল ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে চেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: ২০১৩-’১৪ থেকে ২০১৫-’১৬ এই তিন আর্থিক বছরের ব্যালান্স শিট, মোট অ্যাকাউন্টের কত শতাংশ কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ও সেভিসং অ্যাকাউন্ট (কাসা), কোন কোন ক্ষেত্রে ঋণ বেশি দেওয়া হয়েছে, প্রথম ৫০টি অনুৎপাদক সম্পদের অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে বিশদ তথ্য, প্রথম ৫০টি অনুৎপাদক সম্পদের অ্যাকাউন্ট, যেগুলি ঢেলে সাজা হয়েছে ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: হিসেব কষে বাজেট বুঝুন
যে-সব শর্তের ভিত্তিতে মূলধন দেওয়া হবে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনে কর্মী ও অফিসারদের কিছু সুবিধা ছাঁটাই করা এবং লোকসানে চলা শাখা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। মূলত এই কারণেই প্রতিটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলাদা আলাদা মউ স্বাক্ষর করার কথা বলা হয়েছে। তাতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ছাড়াও কর্মী এবং অফিসারদের ইউনিয়নকেও স্বাক্ষর করতে হবে।
প্রসঙ্গত, তুলনায় দুর্বল ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মূলধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক হাল খতিয়ে দেখে মউয়ের বয়ান তৈরি করার দয়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসবিআই ক্যাপিটালকে। ইউকো ব্যাঙ্ক ছাড়াও কলকাতায় সদর দফতর থাকা ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্কও আছে ওই ১০ ব্যাঙ্কের তালিকার।
চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই নিয়ে কর্মী ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনার নির্দেশও দিয়েছে কেন্দ্র। সেই মতো সম্প্রতি দিল্লিতে ইউকো ব্যাঙ্কের কর্মীদের ডেকে পাঠান কর্তৃপক্ষ। ওই বৈঠকের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউকো ব্যাঙ্ক কর্মী ইউনিয়নের নেতা এবং এআইবিইএ-র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক পার্থ চন্দের অভিযোগ, ‘‘প্রথমেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কথার খেলাপ করলেন। বলা হয়েছিল, বৈঠকটি হবে ইউকো ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদের সঙ্গে। কিন্তু চেয়ারম্যান এবং দুই এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর ছাড়া পর্ষদের অন্য কোনও সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। ফলে বৈঠকে তেমন ভাবে কোনও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাই হয়নি।’’ তবে আইয়ার বলেন, ‘‘এটি ছিল একটি প্রাথমিক বৈঠক। চুক্তির বয়ান হাতে পেলে বিশদে ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’