পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) কেলেঙ্কারির তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া সিবিআইয়ের যুগ্ম ডিরেক্টর (বিএসএফসি) রাজীব সিংহকে অবিলম্বে নিজের রাজ্য ত্রিপুরায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। নীরব মোদী কেলেঙ্কারি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক-ভিডিয়োকন গোষ্ঠীর ঋণ ছাড়াও, বর্তমানে চলা সমস্ত ব্যাঙ্কিং প্রতারণার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সিংহ। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিল এই ধরনের জালিয়াতিগুলির তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়েই।
শুধু সিংহ নন, সিবিআইয়ের ডিআইজি অনীশ প্রসাদ এবং এসপি আর গোপালকৃষ্ণ রাওকেও ত্রিপুরায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে যুগ্ম ডিরেক্টর (এসটিএফ) অ্যান্ড স্পেশ্যাল ক্রাইম নীনা সিংহকেও রাজস্থানে ফেরত পাঠিয়েছে সিবিআই। ত্রিপুরা ও রাজস্থান সরকারের অনুরোধেই এই সিদ্ধান্ত বলে সিবিআইয়ের দাবি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, কয়েক মাস ধরে তদন্তের পরে পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত নীরব মোদী এবং মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে মে-র চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে রেড কর্নার নোটিস জারির জন্য ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে তদন্তকারী সংস্থাটি। এই অবস্থায় দায়িত্বে থাকা অফিসারদেরই যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে তদন্ত আদৌ ঠিক পথে এগোবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে তারা।
অভিযোগ
• বিদেশে নয়ছয় হয়েছে ব্যাঙ্কের ৬,৪০০ কোটি টাকার তহবিল
• এর একাংশ নীরবের বাবার হাতে গিয়েছে
• অভিযুক্তের সংখ্যা ২৪। এর মধ্যে আছেন নীরব, তাঁর বাবা, ভাই, বোন, কিছু ডিজাইনার গয়না সংস্থা
• হংকং, দুবাই ও আমেরিকার ১৭টি ভুয়ো সংস্থাকে অর্থ মেটানো হয়েছে
অনেকের আবার মত, ত্রিপুরা ও রাজস্থান, উভয় রাজ্যেই বিজেপি সরকার। এই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মোহুল চোক্সী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্বোধনে ‘মেহুল ভাই’। নীরবকেও শেষ সর্বসমক্ষে দেখা গিয়েছে দাভোসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে। তাঁদের প্রশ্ন, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র কি এ ভাবেই তদন্ত প্রভাবিত করতে চাইছে? এই অবস্থায় মেয়াদ শেষের আগে অবিলম্বে তদন্তকারী অফিসারদের সরিয়ে দেওয়ার এই ঘটনায় মোদী সরকার বিড়ম্বনায় পড়বে বলেও মনে করছেন তাঁরা।