ফাইল চিত্র।
বিস্তর অপেক্ষাতেও খদ্দের মেলেনি। তাই এখন বাজারে প্রথম বার এয়ার ইন্ডিয়ার শেয়ার ছাড়া (আইপিও) বা ১০০% মালিকানাই বেচে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুধু একটি বিষয়ে এখনও সরকার মরিয়া। তা হল, বিদেশি সংস্থার হাতে নিয়ন্ত্রণ ছাড়া হবে না।
৪৮,০০০ কোটি টাকার দেনায় ভারাক্রান্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬% মালিকানা বিক্রি করতে চেয়েছিল কেন্দ্র। বাড়ানো হয়েছিল আগ্রহপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমাও। তবু কেনার লোক মেলেনি। কারণ খুঁজতে নিয়োগ করা হয়েছিল উপদেষ্টা সংস্থা। মঙ্গলবার সরকারের ঘরে তার রিপোর্ট জমা পড়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২৪% অংশীদারি সরকার নিজের হাতে রাখতে চাওয়ায় লগ্নিকারীদের মনে সংশয় ও অনিচ্ছা রয়েছে। ঘটনা হল, কোনও সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৬% মালিকানা কিনলে, তাকে ৩৩,০০০ কোটির দেনার দায় নিতে হত।
রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বুধবার আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। সেখানে ১০০% মালিকানা বেচে দেওয়ার পাশাপাশি শেয়ার বাজারে এয়ার ইন্ডিয়াকে নথিভুক্ত করে প্রথম বার শেয়ার ছাড়া নিয়ে আলোচনা হয়। নতুন করে বেচার আগে সংস্থার দেনার বোঝা এবং কর্মী সংখ্যা কিছুটা কমানো যায় কি না, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও। কারণ, সংস্থায় প্রায় ২৭,০০০ কর্মী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৪০% স্থায়ী। অন্যান্য বিমান সংস্থার কর্মীর অনুপাতে যা অনেকটাই বেশি।
সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, সরকারি অংশীদারি ৫১ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনা হলে এয়ার ইন্ডিয়ায় বহুজাতিক সংস্থার মতো পেশাদার বোর্ড তৈরি করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংস্থাটির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেন, ‘‘এয়ার ইন্ডিয়ার ক্রেতা মেলেনি, এতে এমন কিছু রাজনৈতিক সমস্যা নেই। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে যদি বার্তা যায়, মহারাজাকে জলের দরে বেচে দেওয়া হল, তা হলে মুশকিল। তাই এ বিষয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করা হবে না।’’
সরকারি সূত্রের যুক্তি, সরকারের হাতে কিছুটা মালিকানা থাকলে লগ্নিকারীরা ভরসা পাবেন, এমনটাই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে যে কোনও সিদ্ধান্তে সরকারের সম্মতি নিতে হবে। আর সরকার বদল হলে সরকারের মনোভাবও বদলে যেতে পারে।
নীতি আয়োগের সুপারিশে অবশ্য ১০০% বিলগ্নিকরণের কথাও বলা হয়েছে। ফলে সরকারের সে পথে হাঁটতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের মতে, ‘‘সরকারের এমন কোনও লক্ষ্য নেই যে ২৪% মালিকানা হাতে রাখতেই হবে। ফলে ওই শর্ত পুনর্বিবেচনা করা যেতেই পারে।’’
অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি এ বার বিকল্প প্রস্তাব খতিয়ে দেখবে। ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে সচিবদের নিয়ে গড়া কমিটি সেই প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করছে।
পুরনো সমস্যা
• ৪৮ হাজার কোটির দেনা
• সময়সীমা বাড়িয়েও খদ্দের মেলেনি। আসেনি আগ্রহপত্র
সমাধানের ভাবনা
• প্রথম বার শেয়ার ছাড়া
• প্রয়োজনে পুরো সংস্থা বিক্রি