লুধিয়ানা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত শুধুমাত্র পণ্য পরিবহণের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়তে ৮১,৪৮৯ কোটি টাকা ঢালার প্রস্তাব মঞ্জুর করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
পঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে এ রাজ্যের ডানকুনি পর্যন্ত ১,৮৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পণ্য পরিবহণের ওই রেলপথ তৈরির কথা হয়েছিল ইউপিএ জমানাতেই। বলা হয়েছিল, পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে ওই ‘ইস্ট-ওয়েস্ট ডেডিকেটেড পণ্য করিডর’ তৈরি হলে, অনেকটাই বদলে যাবে পণ্য পরিবহণের নকশা। উপকৃত হবে শিল্প। একই কারণে ওই একই রকম পণ্য করিডর তৈরির কথা রয়েছে মুম্বই থেকে দিল্লি পর্যন্ত। কিন্তু মাঝে জমি জট-সহ নানা কারণে অনেক সময় শ্লথ হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট ফ্রেট করিডরের কাজের গতি। এ দিন তাই সংশোধিত হিসাব মেনে কেন্দ্রের ওই বিপুল অঙ্ক বিনিয়োগে ছাড়পত্র দেওয়াকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
গোড়া থেকেই শুধুমাত্র পণ্য পরিবহণের জন্য এই রেল-পরিকাঠামো নির্মাণকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহল। কারণ, শেষমেশ এই করিডর তৈরি হলে, আকরিক লোহা, কয়লার মতো কাঁচামাল অনেক তাড়াতাড়ি এক জায়গা থেকে অন্যত্র পৌঁছে যাবে। তেমনই দ্রুত স্থানান্তরিত করা যাবে সার, সিমেন্টের মতো তৈরি পণ্যও। ফলে তখন এই লম্বা রেলপথের দু’দিক ধরে শিল্প গড়ে ওঠার প্রভূত সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে আশা করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই করিডরের কাজ শেষ হলে, পণ্য পরিবহণে গতি আসবে। যা থেকে আখেরে সুবিধা হবে শিল্পের। এবং সেই সুবিধা নিতে আবার ওই রেলপথের দু’ধারে কারখানা খোলার পরিকল্পনা করবে বিভিন্ন সংস্থা। তা থেকে তৈরি হবে কর্মসংস্থানের বিপুল সুযোগও। তাই সব মিলিয়ে এ দিন মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র সেই সম্ভাবনাকে ফের উস্কে দিল মনে করছেন তাঁরা।
এ রাজ্যে বিনিয়োগ সম্মেলনে এসে কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রকের অন্যতম সচিব অমিতাভ কান্ত বলে গিয়েছিলেন, এই করিডর তৈরি হলে, তার হাত ধরে খুলে যাবে বিনিয়োগের অনেক নতুন দরজা। তাই রাজ্যগুলিকেও এই প্রকল্পে সাগ্রহে ঝাঁপাতে হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এখন কেন্দ্র যে এই প্রকল্প শেষ করতে সত্যিই একবগ্গা, এ দিন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার বলে মনে করছেন অনেকে।