এ বার সময় বেঁধে ঢালাও বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটতে চায় কেন্দ্র।
সব লাভজনক বড় ও মাঝারি মাপের কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই এর আওতায় আসবে বলে বুধবার জানিয়েছেন লগ্নি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সম্পদ পরিচালনা দফতরের (পূর্বতন বিলগ্নিকরণ দফতর) সচিব নীরজ গুপ্ত। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের নীতি খুব স্পষ্ট। বাজারে শেয়ার ছেড়ে বিলগ্নিকরণের পরে ওই সব সংস্থা স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত করা।
এ ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য: প্রথমত, শেয়ার বেচে হাতে আসা অর্থ দিয়ে রাজকোষ ভরার ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয়ত, এই সব সংস্থার দক্ষতা বাড়িয়ে সেগুলিকে প্রতিযোগিতার বাজারের জন্য আরও বেশি করে তৈরি করা ও তাদের কাজকর্মে স্বচ্ছতা আনা। বিলগ্নিকরণের সুফল ঘরে তুলতে পারবে সংস্থাগুলিও। ১) বাজারে পা রাখলে নিজেদের শেয়ার মূল্য যাচাই করতে পারবে তারা। ২) ব্যবসা বাড়াতে মূলধনী বাজার থেকে টাকা তোলা সম্ভব হবে। ৩) শুধুই নিজস্ব সম্পদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না, যা আদতে সরকারি লগ্নি।
সরাসরি সময়সীমার উল্লেখ না-করেও সংশ্লিষ্ট অফিসারের দাবি, ‘‘পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে এক থেকে দু’বছরের বেশি লাগার কথা নয়। খুব বেশি হলে তিন বছর।’’ ব্যবসার পরিমাণ, মুনাফা, নিট সম্পদ খতিয়ে দেখেই বিলগ্নিকরণের জন্য সংস্থা বাছাই করা হবে। তবে গুপ্ত জানান, একেবারে ছোট সংস্থার শেয়ার ছেড়ে সেগুলিকে বাজারে নথিভুক্ত করার প্রয়োজন নেই। এ জন্য নির্দেশিকা শীঘ্রই জানাবে কেন্দ্র।
তবে তার আগে এখন থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ঘর গোছাতে বলেছেন গুপ্ত। যেমন, গত তিন বছরের অডিট সম্পূর্ণ করা, পর্ষদে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় স্বাধীন ডিরেক্টর নিয়োগ ইত্যাদি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত শেয়ার ছেড়ে বাজারে নথিভুক্ত হয়েছে মাত্র ছ’টি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। আট বছরের তুলনায় যা নামমাত্র।’’ প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে নথিভুক্ত হয়েছে মাত্র দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, তিনটি ২০১০ সালে, ২০১২ সালে একটি। ২০১৪ থেকে ২০১৬-র মধ্যে কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাই নথিভুক্ত হয়নি শেয়ার বাজারে।
বিলগ্নিকরণের গতি বাড়ানো নিয়ে প্রশাসনের তরফে সমস্যা নেই বলে দাবি গুপ্তের। তাঁর মতে, হিসেবে আরও স্বচ্ছতা আনা, তথ্য প্রকাশ ইত্যাদি ব্যাপারে কিছুটা গড়িমসি রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তরফে।