দামে রাশ টানতে চিনির সর্বোচ্চ মজুত সীমা বেঁধে দিল কেন্দ্র। ব্যবসায়ীদের প্রতি এক নির্দেশে তারা শনিবার জানিয়েছে, কলকাতায় একসঙ্গে ১০ হাজার কুইন্টলের বেশি মজুত করা যাবে না। দেশের অন্যত্র তা ৫ হাজার কুইন্টল। পাশাপাশি, চিনি হাতে আসার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবসায়ীকে তা বিক্রি করতে হবে।
খাদ্য মন্ত্রকের প্রস্তাব মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গত ২৭ এপ্রিল চিনির মজুত নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ জারির ক্ষমতা দিয়েছিল। এ বার এক বিজ্ঞপ্তি মারফত তারাই ওই সীমা বেঁধে দিল।
কলকাতায় তুলনায় বেশি চিনি মজুতের অনুমতি দেওয়ার কারণ, এই শহরই সারা দেশে চিনি ব্যবসার সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। দেশের বাকি অংশে তা ৫ হাজার কুইন্টল। এই নির্দেশ দিয়ে কেন্দ্র অবশ্য জানিয়েছে, মজুত সীমা আরও কমানোর স্বাধীনতা রাজ্যগুলির থাকবে।
প্রসঙ্গত, খরার মুখে চিনির উৎপাদন এই মরসুমে কমার আশঙ্কা বাড়ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেজিতে দর দেশের বেশির ভাগ জায়গাতেই ৪০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০১৫-’১৬ বিক্রি মরসুমে (অক্টোবর থেকে সেপ্টেম্বর) উৎপাদন কমে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টনে দাঁড়াবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ইঙ্গিত। গত বছর তা ছিল ২ কোটি ৮৩ লক্ষ টন। এ পর্যন্ত চিনিকলগুলির উৎপাদন ছুঁয়েছে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টন।
দেশে চিনির চড়া দামের পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্যতামূলক ভাবে তা রফতানির নির্দেশও ইতিমধ্যেই বাতিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। দেশে উদ্বৃত্ত উৎপাদনের কারণে ২০১৫-’১৬ সালে ৩২ লক্ষ টন চিনি রফতানির নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র।
আসলে পরপর দু’বছর বৃষ্টি হয়েছে নামমাত্র। পশ্চিম ভারতে চিনিকলগুলির সংগঠন ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের ধারণা, জলের অভাবে মহারাষ্ট্রে আখ উৎপাদন ৪০% কমে নামতে পারে ৫০ লক্ষ টনের নীচে। আর, সেই কারণে চিনির চাহিদা মেটাতে এ বার সম্ভবত আমদানির উপর নির্ভর করতে হবে ভারতকে। চিনির উপর এখন ৪০ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপানো রয়েছে। দেশে চিনির দর কেজিতে ৪০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় তা কমানোর বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র।